নয়াদিল্লি: পৃথিবী থেকে সূর্যের গায়ে প্রকাণ্ড এক গহ্বরের দেখা মিলল এবার। সৌরমণ্ডলে বিশালাকার ওই গহ্বরটির সৃষ্টি হয়েছে। আকারে সেটিকে দেখতে বিরাট এক প্রজাপতির মতো। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র Solar Dynamics Observatory ওই গহ্বরের ছবি তুলেছে। (Butterfly Shaped Hole on Sun)
১১ সেপ্টেম্বর সৌরমণ্ডলে ওই প্রকাণ্ড গহ্বরটি চোখে পড়ে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ওই গহ্বরটির আয়তনপ্রায় ৫ লক্ষ কিলোমিটার বলে জানা গিয়েছে। তার মুখ সৌর বায়ুর উষ্ণ স্রোত নির্গত হচ্ছিল এবং সেই সৌরঝড় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। (Solar Wind)
গহ্বরটির প্রজাপতি-আকারই সর্বপ্রথম নজর কাড়ে বিজ্ঞানীদের। কিন্তু আগামী দিনে মহাজগতের আবহাওয়ার উপর ওই গহ্বরের প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মত তাঁদের। ১৪ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ রবিবার এর প্রভার পৃথিবীতে অনুভূত হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের তরফে ইতিমধ্যেই ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ১৩ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর এই ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের তীব্রতা G1 (সামান্য) অনুভূত হবে, আবার G2 (মাঝারি)-ও হতে পারে তীব্রতা। ব্রিটেনের আবহাওয়া দফতরের তরফে ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
সৌরঝড়ের তীব্রতা বোঝাতে G-Scale ব্যবহার করা হয়। G1 থেকে G5 (চরমতম) পর্যন্ত রয়েছে মানদণ্ড। সৌরমণ্ডলের বহির্ভাগের যে খোলা মুখ, তাকে বলা হয় Coronal Hole. সেখানে সূর্যের চুম্বকীয় ক্ষেত্র যখন উন্মুক্ত হয়ে যায়, সেখান থেকেই সৌরঝড় বেরিয়ে আসে। টেলিস্কোপে Coronal Hole-কে কালো দেখতে লাগে। কারণ শূন্যস্থান পূরণ করতে গরম প্লাজমা ছুটে আসে।
সৌরঝড় থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে চৌম্বকীয় ক্ষেত্র। পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের সংস্পর্শে এলে সৌরকণার সঙ্গে নাইট্রোজেন অক্সিজেনের মতো গ্যাসের বিক্রিয়া ঘটে। এর ফলে রাতের আকাশে যে রঙিন হয়ে ওঠে, তাকে বলা হয় মেরুজ্য়োতি।
এবার সৌরঝড় যখন পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে, সেই সময় মেরুজ্যোতি ঘিরে এমনিতেই বাড়তি উৎসাহ চোখে পড়ছে। কানাডা, আলাস্কা, স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং ব্রিটেনের উত্তর অংশ থেকে মেরুজ্যোতি দেখা যাবে এবার। দক্ষিণের আন্টার্কটিকা থেকে দেখা যাবে মেরুজ্য়োতি। তাসমানিয়া, নিউজিল্যান্ড থেকেও দেখা যেতে পারে।