নয়া দিল্লি: উৎক্ষেপণের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সফলভাবেই চাঁদের পৃষ্ঠ ছুঁয়ে দেখার পথে এগিয়ে চলেছে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)। চাঁদের (Moon) কক্ষপথে প্রদক্ষিণ শেষ হওয়ার পর অবশেষে সফলভাবে চন্দ্রযান-৩ এর প্রোপালশন মডিউল থেকে আলাদা হল ল্যান্ডার 'বিক্রম' (Lander Vikram)। 


এর আগে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)- এর তরফে জানান হয়েছিল যে ১৭ অগাস্ট ভারতীয় সময় ১টা থেকে ১.৩০টার মধ্যে এই বিছিন্ন হওয়ার কাজটি হবে। চন্দ্রকক্ষে ম্যানুয়েভর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর প্রপালশন বিচ্ছেদের কাজটি শুরু হয়।  


চন্দ্রযান-২ এর ক্ষেত্রেও এই 'বিছিন্ন' হওয়ার প্রক্রিয়াটি সফলভাবেই হয়েছিল। তবে গোলযোগ বেধেছিল ল্যান্ডিংয়ের সময়। তাই এবার আর কোনও ত্রুটি যাতে না থাকে, সে বিষয়টি ক্রমাগত খতিয়ে দেখার কাজ করে চলছে ইসরো। ল্যান্ডিংয়ের জন্য ৫০০ বর্গমিটারের বদলে ৪ কিমি x ২.৪ কিমি এলাকা বেচে নিয়েছে ইসরো। ল্যান্ডার বিক্রমে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত জ্বালানিও। এদিন প্রোপালশন মডিউল থেকে আলাদা হয়ে 'ধন্যবাদ' জানিয়েছে বিক্রম। 






এবারের ল্যান্ডারেও বেশ কিছু ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। যেমন এই ল্যান্ডারে একটির বদলে চারটি থ্রাস্টার রাখা হয়েছে। যাতে অবতরণের ধকল সইয়ে নিয়ে পালকের মতো মাটি ছুঁতে পারে বিক্রম। 


চন্দ্রযান-৩ এ আছে একাধিক ইলেকট্রনিক এবং যান্ত্রিক সাবসিস্টেম। চন্দ্রযান--২ এর ল্যান্ডিং সমস্যা থেকে শিক্ষা নিয়েই নেভিগেশন সেন্সর, প্রপালশন সিস্টেম, নির্দেশকেন্দ্র এবং নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রকে আরও উন্নত প্রযুক্তিতে সাজানো হয়েছে। ল্যান্ডার বিক্রমের পাশাপাশি রোভারকেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ডিজাইন করা হয়েছে। 


চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার কথা রয়েছে, চন্দ্রযান-৩ এর। কীভাবে কয়েক কোটি বছর ধরে সেখানে বরফ জমে রয়েছে। সূর্যের বিকিরণে কেন তা আজও গলে যায়নি, সেই বিষয়টিও পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখবে। 


এদিকে, চন্দ্রযানের মতো চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছেছে রাশিয়ার (Russia) নভোযান লুনা-২৫। ২১ অগাস্ট থেকে ২৩ অগাস্টের মধ্যে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা রয়েছে সেটিরও। ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে চন্দ্রযানকে। ৫ অগাস্ট সুষ্ঠুভাবেই চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছেছে সে। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৭ অগাস্ট প্রপালশন মডিউল এবং ল্যান্ডার বিক্রম পৃথক হবে। ২৩ অগাস্ট প্রিলোড করা কমান্ডগুলি ট্রিগার হওয়ার পরে, ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের পৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করবে। অবতরণ যাতে ঠিকমতো হয়, তার জন্য সমস্ত রকমের পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছে ইসরো। হার্ড ল্যান্ডিং এড়াতে ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদে অবতরণের জন্য একটি 'সেলভেজ মোড' রয়েছে।


আরও পড়ুন, চন্দ্রযানকে 'সঙ্গ দিতে' কক্ষপথে লুনা! চাঁদে ভারত-রাশিয়ার 'যুগলবন্দি'