নয়াদিল্লি: সবদিক থেকেই হাত বাঁধা ছিল, পুঁজিও ছিল স্বল্প। কিন্তু তাতে ভর করেই উড়ান ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র। বুধবার মহাকাশ গবেষণার জগতে নতুন করে ইতিহাস লিখতে চলেছে তারা। চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতে চলেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের নজর সেদিকেই। (Chandrayaan 3 Landing)
বুধবার বিকেল ৫টা বেজে ৪৪ মিনিটে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চাঁদের বুকে চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের অবতরণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। তার আগে গত দু'দিন ধরে দফায় দফায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে ল্যান্ডার 'বিক্রমে'র। পালকের মতো তাকে চাঁদের মাটি ছোঁয়ানোই এই মুহূর্তে লক্ষ্য় ভারতীয় বিজ্ঞানীদের।
তার আগে ট্যুইট করে (অধুনা X) ISRO জানাল, সব প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছে। শুধু নির্ধারিত সময়ের অপেক্ষা চলছে। বেঙ্গালুরুর দফতরের ছবি পোস্ট করে এদিন ISRO লেখে, 'স্বয়ংক্রিয় ল্যান্ডিং সিকোয়েন্স (ALS) শুরু করতে প্রস্তুত। নির্ধারিত অবস্থানে ল্যান্ডার মডিউলটি পৌঁছনোর অপেক্ষা চলছে, ভারতীয় সময় অনুযায়ী, ৫টা বেজে ৪৪ মিনিট নাগাদ সেটি নির্ধারিত অবস্থানে পৌঁছবে। তার পর অবতরণের লক্ষ্যে ইঞ্জিন চালু করা হবে। অভিযান পরিচালনার জন্য যে দল রয়েছে, তারা প্রতি মুহূর্তে নির্দেশ দিতে থাকবেন। বিকেল ৫টা বেজে ২০ মিনিটে MoX থেকে অভিযান পরিচালনার কার্য সরাসরি দেখানো হবে'।
চাঁদের মাটিতে নিরাপদে চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে নামানোই লক্ষ্য় ISRO-র। তাই পালকের মতো চাঁদের মাটি ছোঁবে চন্দ্রযান-৩। এই কাজে ISRO-কে সাহায্য করছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিও (ESA)। চন্দ্রযানের ল্যান্ডার 'বিক্রমে'র গতিবিধি ট্র্যাক করতে সাহায্য করছে তারা।
২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানটিকে নামানোর সময় শেষের ১৫ মিনিটই নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করেছিল। শেষ পর্যন্ত পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁতে পারেনি চন্দ্রযান-২। বরং সজোরে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে সেটি। এবার তাই গোড়া থেকেই বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যখন ৮০০ মিটার হবে, গতি নামিয়ে আনা হবে শূন্যে। নামার আগে জমি জরিপ করে নেবে ল্য়ান্ডার 'বিক্রম'। এর পর দূরত্ব কমে যখন ১৫০ মিটারে পৌঁছবে, চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলবে, যা দেখে অবতরণের উপযুক্ত জায়গা বেছে নেওয়া হবে। তাতে বসানো সেন্সর চন্দ্রভূমির স্পর্শ পেলে, ল্যান্ডারের চারটি পা যখন মাটি ছোঁবে, ইঞ্জিন বন্ধ করে দেবেন বিজ্ঞানীরা। চাদের মাটিকে বলা হয় রেগোলিথ। অবতরণের পর ওই মাটি থিতিয়ে আসার জন্য অপেক্ষা করা হবে। এর পর ল্যান্ডার থেকে আলাদা হয়ে চাঁদের মাটিতে নামবে রোভার 'প্রজ্ঞান'। চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করবে রোভার 'প্রজ্ঞান'।