নয়াদিল্লি: আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। তার পরই চাঁদের বুকে তৃতীয় অভিযান। বুধবার হল আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) জানিয়েছে, সামনের মাসেই তৃতীয় চন্দ্রাভিযানে যাবে তাদের তৈরি রকেট। আগাামী ১৩ জুলাই, দুপুর ২টো বেজে ৩০ মিনিটে উৎক্ষপণ হবে চন্দ্রযান-৩-র। সব মিলিয়ে তৃতীয় চন্দ্রাভিযানে খরচ পড়ছে ৬১৫ কোটি টাকা (Chandrayaan 3 Launch)।
এই নিয়ে তৃতীয় বার চন্দ্রাভিযানে রকেট পাঠাচ্ছে ISRO. মহাকাশ গবেষণায় ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই পদক্ষেপ। এর আগে ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২-র অভিযান সফল হয়নি। চাঁদের চারপাশে ঘুরপাক খাওয়া সম্ভব হলেও, ল্য়ান্ডার বিক্রমকে নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামানো যায়নি। বরং চাঁদের বুকে আছড়ে পড়েছিল সেটি। তবে এবার কোনও ঝুঁকি থাকছে না বলে খবর (Science News)।
তবে এবারের অভিযানে সাফল্য পাওয়া নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ISRO. চন্দ্রযান-৩ চাঁদকে আরও ভাল ভাবে বুঝতে, তাকে অধ্যয়ন করতে সাহায্য় করবে বলে মত বিজ্ঞানীদের। নিরাপদে চাঁদের মাটিতে রোবট-চালিত রোভারকে নামানোর সব প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে, GSLV Mark 3 লঞ্চ ভেহিকল থেকে রকেটের উৎক্ষেপণ হবে।
ISRO সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। কী কী ঝুঁকি থাকতে পারে, আগের বার কোথায় কোথায় গলদ থেকে গিয়েছিল, পঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সব খতিয়ে দেখা হয়। কোথাও কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবর নিরাপত্তায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
এবার চন্দ্রযান-৩-তেও একটি ল্যান্ডার এবং রোভার থাকছে, ঠিক যেমনটি ছিল চন্দ্রযান-২-তে। সেগুলির নামও একই রয়েছে, ল্য়ান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। তবে এবার কোনও অরবিটার রাখা হচ্ছে না, চাঁদের চারিদিকে ঘোরার জন্য। বরং এবার স্পেকট্রো-পোলরিমেট্রি অফ হ্যাবিটেবল প্ল্যানেট আর্থ (SHAPE) নামের একটি পেলোড থাকছে। এই সরঞ্জামটি চাঁদের কক্ষপথ থেকে পৃথিবীকে নিরীক্ষণ করে, তার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রেরণ করবে বিজ্ঞানীদের।
মিশনের একটি মূল সংযোজন হ'ল বাসযোগ্য প্ল্যানেট আর্থ (শেপ) পেলোডের স্পেকট্রো-পোলারিমেট্রি অন্তর্ভুক্ত করা। এই সরঞ্জামটি চন্দ্রের কক্ষপথ থেকে পৃথিবীর বর্ণালী এবং পোলারিমেট্রিক পরিমাপ অধ্যয়ন করবে, বিজ্ঞানীদের আমাদের বাড়ির গ্রহ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করবে।
এর আগে, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ অভিযানে বিপত্তি বাধে। পাখির পালকের মতো চাঁদের অবতরণ করাতে গেলেও, চাঁদের বুকে সজোরে আছড়ে পড়ে ল্য়ান্ডার বিক্রম। চাঁদের বুগে অবতরণের সময় নির্ধারিত গতিবেগে তারতম্যের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা যায় সেই সময়। তাই এবার আরও সাবধানী ISRO.