নয়াদিল্লি: মহাশূন্যে হঠাৎই বেসামাল চন্দ্রযান-৩ মহাকাশ যানের উৎক্ষেপক যান LVM3 M4-এর একটি অংশ. উড়ানের ১২৪ দিনের মাথায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করল সেটি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বুধবার সেটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO. ভারতের উপর দিয়ে না গেলেও, প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরে সেটি আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। (Chandrayaan 3 Launcher)


ISRO-র তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের আকাশ অতিক্রম করে সেটি উড়ে যায়নি’। গত ১৪ জুলাই যখন চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের সফল উৎক্ষেপণ হয়, সেটির উৎক্ষেপক যান ছিল  LVM3 M4.  নির্দিষ্ট কক্ষপথে চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানটিকে নামিয়ে দেয় সেটি। সেই উৎক্ষেপক যানের উপরের অংশই বুধবার, ভারতীয় সময় অনুযায়ী, দুপুর ২টো বেজে ৪২ মিনিটে ফের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে প্রবেশ করেছে। (Chandrayaan 3 Launcher Part Reenters Earth)


উৎক্ষেপণের ১২৪ দিনের মাথায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফের প্রবেশ করল চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের উৎক্ষেপক যন্ত্র LVM3 M4-এর অংশটি. মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল বরাবরই। মহাশূন্যে অন্য কোনও কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারে বা মহাশূন্য থেকে কৃত্রিম উপগ্রহ আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।


ISRO-র বিবৃতি পড়তে ক্লিক করুন।


আরও পড়ুন: Klyuchevskoy Volcano: ধোঁয়ার নীচে লাভার স্রোত, হঠাৎ ফুঁসে উঠল আগ্নেয়গিরি, ভয়াল রূপ ক্যামেরাবন্দি


সেই মতো ইন্টার এজেন্সি স্পেস ডেব্রি কোঅর্ডিনেশন কমিটি (IADC) বিশেষ আইন তৈরি করে, যাতে বলা হয়, পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ২০০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে কোনও কৃত্রিম উপগ্রহ অবস্থান করলে, যদি তার কাজ শেষ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে অভিযান সম্পূর্ণ হওয়ার ২৫ বছরের মধ্যে কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দিতে হবে সেগুলিকে।


সেই আইনকে উল্লেখ করে ISRO জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের ১২৪ দিনের মধ্যেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের উৎক্ষেপক যান LMV3 M4-এর একটি অংশ. ফলে এক্ষেত্রে ইন্টার স্পেস এজেন্সি ডেব্রি কোঅর্ডিনেশন কমিটির নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে না। চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে নামিয়ে দেওয়ার পর, উৎক্ষেপক যান LMV3 M4-কে নিস্ক্রিয় করে দেওয়া হয়। বাড়তি চালকযন্ত্র, শক্তি উৎপাদনকারী যাবতীয় যন্ত্রপাতিও তার থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং IADC-র মহাকাশ আবর্জনা প্রশমন নীতি মেনেই এই কাজ করা হয়, যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।  


ISRO জানিয়েছে, মহাশূন্যে দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালিয়ে যাওয়া, সেখানকার পরিবেশ সংরক্ষণের পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ISRO. সেই কারণেই আন্তর্জাতিক নীতি-নিয়ম মেনেই অভিযান শেষে রকেটের শরীর নিস্ক্রিয় করে দেওয়া হয়