নয়াদিল্লি: পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল চার দশক আগে। আবারও পৃথিবীর দিকে মুখ ঘোরাল সে। বইয়ের পাতায় বার বার উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে যার, মহাজাগতিক বস্তুসমূহের মধ্যে জনপ্রিয়তায় উপরের দিকে যে, সেই হ্যালির ধূমকেতু মুখ ফেরাল পৃথিবীর দিকে। সব ঠিক থাকলে এবার চাক্ষুষ করা যাবে তাকে। তবে এখনই নয়, পৃথিবীর আকাশে আবির্ভূত হতে আরও কয়েক দশক সময় লাগবে তার। (Halley's Comet)
গত ৯ ডিসেম্বর সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরত্বে অবস্থান করছিল হ্যালির ধূমকেতু, যা কিনা তার অপসূর অবস্থান বলে পরিচিত। সেই সময় সূর্য থেকে হ্যালির ধূমকেতুর অবস্থান ছিল ৩৫ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট, যা কিনা পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যেকার দূরত্বের চেয়ে ৩৫ গুণ বেশি। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA জানিয়েছে, ওই সময় নেপচুনের কক্ষপথ ছাড়িয়ে, একেবারে প্লুটোর সম্মুখে অবস্থান করছিল হ্যালির ধূমকেতু। (Science News)
প্রতি ৭৬ বছরে সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করে হ্যালির ধূমকেতু। সেই নিরিখে নিজের যাত্রাপথের মাঝামাঝি অবস্থানেই ছিল সে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত ৩৮ বছর ধরে, লাগাতার পৃথিবী থেকে দূরে সরে গিয়েছে হ্যালির ধূমকেতু। তবে ফের পৃথিবীর দিকে মুখ ঘুরিয়েছে সে। আগামী ৩৮ বছর একটু একটু করে পৃথিবীর কাছে ঘেঁষবে সে। সব ঠিক থাকলে ২০৬১ সালের ২৮ জুলাই পৃথিবীর আকাশে পূর্ণাঙ্গ রূপে ধরা দেবে হ্যালির ধূমকেতু।
আরও পড়ুন: Moon Mission: এবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর পালা, প্রশিক্ষণ শুরু বায়ুসেনা পাইলটদের, জানাল ISRO
এর আগে, ১৯৮৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সূর্য থেকে সবচেয়ে কম দূরত্বে অবস্থান ছিল হ্যালির ধূমকেতুর, যা তার অনুসূর অবস্থান বলে পরিচিত। সেইউ সময় সূর্য থেকে তার দূরত্ব ছিল ০.৫৮ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট। ক্রমশ দূরে সরতে সরতে এর পর পৃথিবীর আকাশ থেকে কার্যত বিলীন হয়ে যায় হ্যালির ধূমকেতু। ২০০৩ সাল থেকে আর তার দেখা পাননি বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর আকাশে ফিরতে উদ্যত ধূমকেতু হিসেবে হ্যালির ধূমকেতুরই হদিশ মেলে প্রথম। ১৬৮২ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি সেটির আবিষ্কার করেন। কিন্তু সেটি যে আসলে ধূমকেতু, প্রথমে তা বুঝতে পারেননি তিনি। তাই হ্যালির ধূমকেতুকে 'কেশযুক্ত নক্ষত্র' বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। ১৭৫৮ সালে ফের আকাশে আবির্ভাব ঘটে হ্য়ালিপর ধূমকেতুর। কিন্তু তার আগে, ১৭৪২ সালেই মারা যান এডমন্ড। তাঁর নামানুসারেই ধূমকেতুটির নামকরণ হয় পরবর্তী কালে।