নয়াদিল্লি: পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে মুখিয়ে থাকি আমরা। ভাল করে দেখলে ওই সময় চাঁদকে ঘিরে জ্যোতির্বলয়ও চোখে পড়ে (Moon Halo)। চাঁদকে ঘিরে বৃত্তাকারে আবির্ভূত হয় ওই আলোর বলয়। সবমিলিয়ে স্বর্গীয় রূপে ধরা দেয় চাঁদ। কিন্তু চাঁদকে ঘিরে ওই জ্যোতির্বলয়ের সৃষ্টি হয় কী করে, তা জানেন কি? এর উত্তর রয়েছে বিজ্ঞানের কাছেই। (Science News)


চাঁদকে ঘিরে এমনিতেই হাজারো লোককথা রয়েছে। চাঁদকে ঘিরে আবির্ভূত ওই জ্যোতির্বলয় নিয়েও রয়েছে এমন হাজারও কল্পকথা। কিন্তু আসল কথা হল, চাঁদকে ঘিরে ওই জ্যোতির্বলয়ের সৃষ্টি হয় বরফের স্ফটিক থেকে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বরফের স্ফটিক জমেই উপগ্রহের চারিদিকে ওই উজ্জ্বল বলয়ের সৃষ্টি।


কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির Earth And Environmental Engineering বিভাগের গবেষক কারা ল্যাম্ব জানিয়েছেন, বায়ুণ্ডলের উপরে ভাসমান বরফের স্ফটিক বৃত্তাকারে জমা হয়ে ওই বলয়ের সৃষ্টি। তার উপর চাঁদের আলো পড়ে প্রতিসরণ ঘটে, যার ফলে ওই বলয়কে উজ্জ্বল হয়ে ধরা দেয় আমাদের চোখে। গোটাটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।


আরও পড়ুন: সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে লাগ্র্যাঞ্জ পয়েন্ট পৌঁছল Aditya-L1


এর বিশদ ব্যাখ্যাও তুলে ধরেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, মাটি থেকে ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়, বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বরফের মেঘের মধ্যে জমা হয়। বায়ুমণ্ডলের অনেক উঁচুতে বরফের মেঘ তৈরি হয় বলে, তার আস্তরণও হয় পাতলা। খালি চোখে অনেক সময় দেখাই যায় না। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে বরফের ওই মেঘের রাশি বিরাজ করে। সেখান থেকেই ওই বলয়ের সৃষ্টি।


তবে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই দেখা হোক না কেন, সেই সময় আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন, চাঁদকে ঘিরে থাকা ওই জ্যোতির্বলয়ের আকার সমান হয় বলে মত বিজ্ঞানীদের। তবে জ্যোতির্বলয় তৈরি হয় যে বরফের স্ফটিক জমে, সেই বরফের স্ফটিকগুলি আকারে ষড়ভুজ হয়। কখনও কখনও এই জ্যোতির্বলয়ের প্রস্থ হয় ২২ ডিগ্রি, কখনও আবার ৪৬ ডিগ্রি।


চাঁদকে ঘিরে থাকা এই জ্যোতির্বলয় নিয়ে নানা লোককথাও প্রচলিত রয়েছে। কিছু দেশে ওই জ্যোতির্বলয়কে দুর্যোগের ইঙ্গিত বলে ধরা হয়। বিজ্ঞান যদিও এই যুক্তি মানে না। চাঁদই নয়, সূর্যকে ঘিরেও এমন জ্যোতির্বলয় দেখা যায়। তবে সূর্য এতটাই উজ্জ্বল যে তাকে ঘিরে থাকা জ্যোতির্বলয় চোখে পড়ে না। অন্য গ্রহের চারপাশেও এমন জ্যোতির্বলয় তৈরি হয়।