নয়াদিল্লি: একটি বা দু’টি নয়, সমুদ্রতটে ভেসে এল কমপক্ষে ২ হাজার পেঙ্গুইনের দেহ। একদিনে নয় যদিও, পর পর ১০ দিন প্রায় ২ হাজার পেঙ্গুইনের দেহ ভেসে এসেছে উরুগুয়েতে। আর তাতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে (Viral News)। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সাধারণ কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মেলেনি। তাই এত পেঙ্গুইনের মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনাচ্ছে (Penguins Death)।


যে ২ হাজার পেঙ্গুইনের মৃত্যু হয়েছে, সবক’টিই প্রায় শিশু, মেগাল্যানিক প্রজাতির। আটলান্টিক মহাসাগরে তাদের মৃত্যু হয়। পড়ে জলের তোড়ে এসে পড়ে উরুগুয়ের উপকূলে। সে দেশের পরিবেশ মন্ত্রী কারমেন লিজাগোয়েন এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।


কারমেনের বক্তব্য, “জলেই মৃত্যু হয়েছে পেঙ্গুইনগুলির। অধিকাংশ, প্রায় ৯০ শতাংশ পেঙ্গুইনই প্রায় শিশু। খালিপেটে ছিল সকলে।” এভিয়ান ইনফ্লুয়েঝঞ্জা হয়েছিল কিনা, নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয় তা-ও। কিন্তু তাতে তেমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।


মেগল্যানিক প্রজাতির পেঙ্গুইন সাধারণ দক্ষিণ আর্জেন্টিনায় পাওয়া যায়। শীতকালে দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে খাবার এবং উষ্ণ জলের সন্ধানে উত্তরে সরে আসে তারা। কখনও কখনও ব্রাজিলের উপকূলেও দেখা মেলে সেই সময়। তাতে কিছু পেঙ্গুইনের মৃত্যু হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু একসঙ্গে এত পেঙ্গুইনের মৃত্যু ভাবাচ্ছে সকলকে।


আরও পড়ুন: Coral Reefs: সমুদ্রগর্ভের বৃষ্টি অরণ্য, বাস্তুতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী, উষ্ণায়নের প্রকোপে রঙিন প্রবাল এখন বিবর্ণ, নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে


কারমেন জানিয়েছেন, এই প্রথম নয়। এর আগে, ২০২২ সালে ব্রাজিলেও একই ঘটনা ঘটে। সেখানেও দফায় দফায় অনেক পেঙ্গুইনের দেহ জলে ভেসে উপকূলে এসে পড়ে। তবে এবার সংখ্যটা যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে উদ্বেগের কারণ রয়েছে। কারণ আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূল বরাবর ১০ কিলোমিটার পর্যন্তই ৫০০ পেঙ্গুইনের দেহ মিলেছে।


তবে একসঙ্গে এত সংখ্যক পেঙ্গুইনের মৃত্যুর জন্য মৎস্য শিকার এবং সর্বোপরি বেআইনি মৎস্য শিকারকে দায়ী করছেন পরিবেশবিদরা। SOS Marine Wildlife Rescue নামক অলাভজনক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রিচার্ড টিসোর জানিয়েছেন, ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই অনাহারে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু শুরু হয়।  


এর পাশাপাশি আটলান্টিক মহাসাগরে জুলাই মাসে আছড়ে পড়া উপক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় দুর্বল প্রাণীদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে ঝড়ের প্রকোপে সাগর-মহাসাগরের জল উথালপাথাল হলে, মাঝে পড়ে মৃত্যু হতে পারে সামুদ্রিক প্রাণীদের। শুধু পেঙ্গুইনই নয়, অ্যালব্যাট্রস, সিগাল, কচ্ছপেরও মৃত্যুর ভূরি ভূরি উদাহরণ সাম্প্রতিক কালে পাওয়া গিয়েছে।