কলকাতা: রোভার 'প্রজ্ঞান'-এর (Rover Pragyan) সৌজন্যে চাঁদের (Moon Walk) মাটিতে একপ্রস্ত হাঁটাহাঁটি করে ফেলল ভারত। বৃহস্পতিবার সকালে এই খবর দিয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-এর। তবে আপাতত এটুকুই। 'প্রজ্ঞান' কী দেখল, কী জানল, কী পেল তা বিশদ জানাতে 'more updates soon' বলে টানটান অ্যাডভেঞ্চার ধরে রাখলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।






কী পরিস্থিতি?
রুদ্ধশ্বাস উদ্বেগের প্রহর কাটিয়ে বুধবার, ঠিক সন্ধে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পাখির পালকের মতো নেমে আসে চন্দ্রযান-৩। ইসরোর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে হাততালিতে ফেটে পড়েছে গোটা দেশ। চোখের জল বাধ মানছে না বহু মানুষের। চার বছর আগে যে পর্যায়ে এসে আটকে গিয়েছিল চন্দ্রাভিযান, এবার সেই পর্যায় অনায়াসে পেরিয়ে মহাকাশ গবেষণায় মাইলফলক গড়ে ফেলল ভারত। চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর, ল্যান্ডার 'বিক্রম' পৃথিবীতে বার্তা পাঠাল, 'ভারত, গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছি আমি। লক্ষ্যপূরণ হল তোমারও'। ভারতবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছে ISRO-ও। মুহূর্তটা আবেগে ভেসে যাওয়ার তো বটেই। তবে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অভিযানের একটা বড় চ্যালেঞ্জ সফল ভাবে উতরোনো গেলেও কাজ বাকি এখনও। তবে এবার কাজটা মূলত রোভার 'প্রজ্ঞান' -এর। চাঁদের মাটিতে পৌঁছে ল্যান্ডার বিক্রমের কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরই তার দরজা খুলে যায়। এবার ল্যান্ডার 'বিক্রমের পেটের ভিতর থেকে চাঁদের বুকে নেমে আসে রোভার 'প্রজ্ঞান'।


রোভার সম্পর্কে...


বুধবার থেকেই শুরু হল চন্দ্রদিন। অর্থাৎ চাঁদের দিন। ওই সময় চাঁদের ওই প্রান্তে পড়বে সূর্যের হালকা আলো। সেই আলোকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর হিসেবে মাত্র ১৪ দিন যা চাঁদের নিরিখে এক চন্দ্রদিন কাজ করবে চন্দ্রযান-৩। 'বিক্রম' ল্যান্ডারে রয়েছে তিনটি পেলোড। তার মধ্যে RAMBHA-LP চন্দ্রপৃষ্ঠের প্লাজমার ঘনত্ব এবং সময়ের সঙ্গে তার পরিবর্তন পরিমাপ করবে। Chandra’s Surface Thermophysical Experiment বা ChaSTE চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি তাপমাত্রাগত বৈশিষ্ট্যের পরিমাপ করবে, এবং Instrument for Lunar Seismic Activity বা  ILSA অবতরণ স্থানের চারপাশে কম্পন পরিমাপ এবং চাঁদের মাটি ও আবরণের গঠন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। অন্যদিকে, চাঁদের বায়ুমণ্ডলের মৌলিক গঠনের উপর তথ্য সংগ্রহ করবে ৬ চাকার রোভার। রোভারেও ২টি পেলোড। চন্দ্রপৃষ্ঠের মৌলিক গঠন বোঝার পাশাপাশি, চাঁদে থাকা পাথরের রাসায়নিক উপাদান নিয়ে পরীক্ষা চালাবে তারা। ইসরো সূত্রে জানা যাচ্ছে, রোভার প্রজ্ঞানের মধ্যে রয়েছে একাধিক বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অনেক কিছুই এখনও মানুষের অজানা। সেই দিকগুলি নিয়েই খোঁজ শুরু করবে রোভার প্রজ্ঞান। কোন কোন উপাদান দিয়ে চাঁদের মাটি তৈরি, তা খতিয়ে দেখে পৃথিবীতে তথ্য পাঠাবে প্রজ্ঞান। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে এর স্পেকট্রোমিটার বিশ্লেষণ করবে। সেই কাজের লক্ষ্যেই আজকের হাঁটাহাঁটি। কতদূর কী জানা গেল, সেটা বলবে সময়।   

আরও পড়ুন:চাঁদে সফল অবতরণ চন্দ্রযান ৩-এর, অভিনন্দন জানিয়ে ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর