কলকাতা: চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ইতিহাস রচনা করেছে ভারত। সূর্যের উপর নজরদারি চালাতেও রওনা দিয়েছে সৌরযান। পড়শি গ্রহ শুক্রের চক্কর কাটার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO. তার মধ্যেই কলকাতায় এসে বড় ঘোষণা ISRO প্রধান এস সোমনাথের। জানালেন, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে এক ভআরতীয় নভোচারীকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমেরিকার মহাকাশযানে চেপে এই কার্য সম্পন্ন হবে। (ISRO Next Mission)
চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার 'বিক্রম' এবং রোভার 'প্রজ্ঞান'কে নামিয়ে তাক লাগিয়য়ে দিয়েছে ISRO. সেই সাফল্যের জন্য কলকাতায় রাজভবনে ডেকে সোমনাথকে 'গভর্নর অফ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড' দেওয়া হয়। সোমনাথের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানেই এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ISRO-র পরবর্তী অভিযান নিয়ে মুখ খোলেন সোমনাথ। (S Somanath)
সোমনাথ জানিয়েছেন, ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে স্পেস ল্যান্ডিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ভারতীয় মহাকাশচারী পাঠানোর জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছে ISRO. আমেরিকার সহযোগিতায় সেখানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেবেন ভারতীয় মহাকাশচারী। শুধু মহাকাশ গবেষণা বা সেখানের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রশিক্ষণই নয়, মহাশূন্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলিও আমেরিকার কাছ থেকে শিখে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সোমনাথ। তাঁর দাবি, এর ফলে আগামী দিনে 'গগনযান' অভিযানের রাস্তা আরও সুগম হবে ভারতের জন্য।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ভারতীয় মহাকাশচারীকে পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে কথা হয়েছে। NASA-র অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন জানিয়েছেন, আমেরিকার মহাকাশযানে চেপেই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে রওনা দেবেন জনৈক ভারতীয় মহাকাশচারী। তবে শুধু ঘুরে দেখা নয়, এই অভিযানকে নিজেদের সাফল্যের কাজে লাগাতে চায় ISRO, যাতে আগামী দিনে মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে লাভবান হয় ভারত।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের মূল লক্ষ্য হল মহাকাশ বিষয়ক গবেষণার কাজ সহজতর করে তোলা। মহাকাশ অভিযান, মাইক্রোগ্র্যাভিটি, মহাকাশে প্রাণের সম্ভাবনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ, পরীক্ষা নিরীক্ষা হয় সেখানে। ১৬টি দেশের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয়েছে বসবাসের যোগ্য এই কৃত্রিম উপগ্রহ। রকেটের মাধ্যমে সেটি পাঠানো হয় মহাকাশে। ঘণ্টায় প্রায় ২৮ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে কক্ষপথ ধরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সেটি। পৃথিবী থেকে এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ৪০৮ কিলোমিটার। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে রাশিয়ার। তাদের পাঠানো যান এবং যন্ত্রাংশ সেটির কক্ষপথ নির্ধারণ করে।