কলকাতা: আয়তনে বাড়ছে মানবমস্তিষ্ক (Brain Volume Study), উঠে এল নতুন এক গবেষণায়। এবং তাতে লাভের সম্ভাবনা বেশি, মনে করছেন গবেষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এর ফলে সার্বিক ভাবে 'ডিমেনশিয়া'-র মতো সমস্যা কমতে পারে। তবে এসব পূর্বাভাসে সিলমোহর দেওয়ার জন্য আরও গবেষণা জরুরি। আপাতত, যতটুকু জানা গিয়েছে তাতেই চমকে উঠেছেন বিশেষজ্ঞরা। 


কী জানা গেল?
'JAMA Neurology' শীর্ষক জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ৫৫-৬৫ বছরের ৩ হাজার অংশগ্রহণকারীর মস্তিষ্কের 'ইমেজ' বিশ্লেষণ করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেভিস হেলথের একদল গবেষক। সেই বিশ্লেষণ থেকে তাঁদের বক্তব্য, তিরিশের দশকে যাঁরা জন্মেছিলেন তাঁদের নিরিখে জেনারেশন 'এক্স' অর্থাৎ যাঁরা সত্তরের দশকে জন্মেছেন তাঁদের মস্তিষ্কের সার্বিক আয়তন অন্তত ৬.৬ শতাংশ বেশি। আরও একটু তলিয়ে দেখা যাক?
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেভিস হেলথের ওই গবেষকদের বক্তব্য, সার্বিক ভাবে জেনারেশন 'এক্স'-র হোয়াইট ম্যাটারের আয়তন ৮ শতাংশ বেশি। আর গ্রে ম্যাটার পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশ ধরে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, হিপোক্যাম্পাস, যা কিনা স্মৃতি ও শিখনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তার আয়তনও জেনারেশন 'এক্স'-এর ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় সার্বিক ভাবে ৫.৭ শতাংশ বেড়েছে। উচ্চতা, বয়স এবং পুরুষ-নারী--এই বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করেও এই পরিবর্তন ধরা পড়েছে, দাবি গবেষকদলের। দলটির প্রধান, চার্লস দেকার্লির কথায়, 'কে কোন দশকে জন্মেছেন, তা তাঁর মস্তিষ্কের আয়জন ও সার্বিক মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ধারণ করছে।'


ব্যাখ্যা...
গবেষকদলের ব্যাখ্যা, এর নেপথ্যে জিনের কারিকুরি থাকতে পারে। তবে তাঁদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, কিছু অন্য়ান্য বিষয়-যেমন সমাজ, সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্য--এই বদলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এই পরিবর্তনে আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, মস্তিষ্কের আয়তন বাড়লে আখেরে বয়সজনিত রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়তে পারে। সার্বিক ভাবে এর ফলে কমতে পারে ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা, মনে করছেন তাঁরা। পৃথিবীর নানা প্রান্তে বয়স্কদের মধ্যে ডিমেশনিয়া এখন বড় সমস্যা। সে দিক থেকে এই গবেষণার ফলাফল আশার আলো হতে পারে অনেকের কাছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখনই এতটা নিশ্চিত হওয়ার মতো জায়গা নেই। দরকার আরও গবেষণা, মস্তিষ্কের আয়তন এবং বয়সজনিত রোগের সম্পর্ক নিয়ে নিশ্চিত হওয়াও জরুরি। তত ক্ষণ পর্যন্ত এই আশাটুকুই বা মন্দ কী?


 


আরও পড়ুন:চন্দ্রপৃষ্ঠে শিবশক্তি পয়েন্টের নামে সিলমোহর, এবার স্বীকৃতি দিল আন্তর্জাতিক মহল