নয়াদিল্লি: নজরদারি চালানোর ক্ষেত্রে এখনও বিদেশি স্যাটেলাইট সংস্থাগুলির উপর নির্ভরশীল ভারত। পহেলগাঁও হামলার পর সেই খামতি আরও বেশি করে চোখে পড়েছে। সেই নিয়ে চর্চার মধ্যেই ১০১তম কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে গিয়ে ধাক্কা খেল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO. মাঝ আকাশে আগুনের গোলায় পরিণত হল ভারেতর স্যাটেলাইটটি। (ISRO EOS-09 Satellite Launch)

রবিবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে নিজেদের ১০১তম স্যাটেলাইট, EOS-09-এর উৎক্ষেপণ করে ISRO. Polar Satellite Launch Vehicle (PSLV-C61) ব্যবহার করে স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ হয়। কিন্তু অভিযান সফল হয়নি। মাঝ আকাশেই বিস্ফোরণ ঘটে স্যাটেলাইটটি আগুনের গোলায় পরিণত হয়। (ISRO News)

এদিন উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পরই মাঝ আকাশে নষ্ট হয়ে যায় স্যাটেলাইটটি। ISRO-র প্রধান ভি নারায়ণ বলেন, “আজ PSLV-C61 যান উৎক্ষেপণের চেষ্টা করি আমরা। সেটি একটি চার স্তরীয় যান। প্রথম দুই ধাপ ঠিকঠাকই উতরে গিয়েছিলাম। কিন্তু তৃতীয় ধাপে গিয়ে সফল হয়নি অভিযান। আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। আশাকরি শীঘ্রই ফিরতে পারব।”

আকাশ থেকে পৃথিবীতে দীর্ঘমেয়াদি নজরদারি চালানোর কাজে মহাকাশে পাঠানো হচ্ছিল EOS-09 স্যাটেলাইটটিকে। অভিযান শেষে নিজেই নিজেকে শেষ করে দিতে পারে, এমন সক্ষম করে তোলা হয়েছিল স্যাটেলাইটটিকে।  স্যাটেলাইটে রেডার প্রযুক্তি বসানো ছিল যেমন, তেমন মহাকাশ থেকে উচ্চমানের ছবি তোলার ব্যবস্থাও ছিল। ২৪ ঘণ্টা পৃথিবী নজরদারি চালানোর কথা ছিল স্যাটেলাইটটির। ১৬৯৬ কেজি ওজনের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ থেকে নজরদারি চালানোয় ভারত আরও খানিকটা এগিয়ে যেত। কারণ এতে আবহাওয়ার উপর যেমন নজরদারি চালানো যত, বিপর্যয় রোখা যেমন সম্ভব হত, তেমনই সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলির উপরও নজরদারি চালানো সম্ভব হতো ভারতের জন্য। 

এদিন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দেখতে ভোর ভোর উঠে পড়েন শ্রীহরিকোটার মানুষজন। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের আবহে নিরাপত্তার স্বার্থে তাতে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি কাউকে। 

এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, উড়ানের জন্য যে হাইড্রক্সিল টার্মিনেটেড বলিবুটাডিন প্রপেল্যান্ট ব্যবহার করা হয়, ২০৩ সেকেন্ড পরই দুর্বল হয়ে পড়ে। ২০১৭ থেকে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে ৬৩টি স্যাটেলাইট উইৎক্ষেপণ করা হয়েছে PSLV-র মাধ্যমে, যার মধ্যে তিনটি সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে।