নয়াদিল্লি: আর মাত্র কয়েকঘণ্টা। তার পরই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হবে ইসরোর গগনযান টেস্ট ভেহিকল অ্যাবর্ট মিশনের (ISRO On Gaganyaan Test Abort Mission)। এদিন ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ফেসবুক পেজে যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে, তাতে জানানো হয় আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার, ঠিক সকাল ৮টায় এটির উৎক্ষেপণ হবে। তার চূড়ান্ত কাউন্টডাউনও শুরু হয়ে গিয়েছে, পোস্টে জানাল ইসরো (ISRO News)। সূত্রের খবর, এই পর্যায়ে 'সিঙ্গল স্টেজ লিকুইড প্রোপালশান' রকেট উৎক্ষেপণ হওয়ার কথা।
আর যা...
মহাকাশ গবেষণায় চন্দ্রযান ৩ অভিযানের সাফল্যকে কুর্নিশ জানিয়েছে গোটা বিশ্ব। মহাকাশ সংক্রান্ত উদ্যোগে ভারত যে জোরালো নজর দিচ্ছে, সেটা গত বেশ কয়েক বছর ধরেই স্পষ্ট। সেই পথে হেঁটেই এবার গগনযান মিশনের টেস্ট ফ্লাইট। এই পরীক্ষামূলক পর্যায়ের মূল লক্ষ্য, ভবিষ্যতের নভোচরদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা।
নভোচরদের তিন দিনের জন্য ৪০০ কিলোমিটার লো-অরবিটে পাঠানো এবং নিরাপদে ফিরিয়ে আনাই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য। সে জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা জরুরি। আগামীকাল তারই প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হতে চলেছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে গোটা প্রক্রিয়ার মেয়াদ ৫৩১.৮ সেকেন্ড। অভিযানের সাফল্যের উপর পরবর্তী পর্যায়ের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ নির্ভর করছে। সবটা ঠিকঠাক উতরোলেই মহাকাশে নভোচর পাঠানোর স্বপ্নপূরণ হওয়ার কথা।
টুকিটাকি...
এই টেস্ট ভেহিকল অ্যাবর্ট মিশন- বা টিভি ডি-১-এর মধ্যে যে ক্রু এসকেপ সিস্টেম এবং ক্রু মডিউল রয়েছে, তা ১৭ কিলোমিটার উচ্চতায় উৎক্ষেপণ হওয়ার কথা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের হিসেব ঠিক থাকলে বঙ্গোপসাগরে নিরাপদে টাচডাউন হওয়ার কথা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, শ্রীহরিকোটার উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে ঠিক ১০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে পড়ার কথা এই মডিউলের। ইসরো জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে টাচডাউনের পর এই ক্রুল মডিউলটি উদ্ধার করে আনা হবে। সে জন্য একটি ভেসেল এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি টিমও তৈরি রয়েছে।
প্রেক্ষাপট...
কদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানোর চেষ্টা করবে ভারত। সঙ্গে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০৩৫ সালের মধ্যে স্পেস স্টেশন তৈরির নকশা বানাতেও নির্দেশ দিয়েছেন স্পেস ডিপার্টমেন্টকে। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের পর মহাকাশ গবেষণায় যে সরকার জোরালো উদ্যোগ নিতে চাইছে, সেটা এই ঘোষণার পর স্পষ্ট হয়ে যায়। পরে ইসরোর তরফেও ট্যুইট করে জানানো হয়েছিল বিষয়টি। বস্তুত, গত অগাস্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩-এর সফল অবতরণের পর গোটা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছিল ইসরো। দুরন্ত ওই অভিযানের ঠিক আগেই রাশিয়ার একটি অভিযান ব্যর্থ হয়ে যায়। একসময়ে মহাকাশ গবেষণার অন্যতম পথিকৃৎ রাশিয়ার এই ব্যর্থতার পাশে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার এই সাফল্য গোটা দুনিয়ার নজর কাড়ে। এতেই শেষ নয়। এর পর সূর্যের উদ্দেশে অভিযান শুরু করে ইসরো। তখনই শোনা যায়, নভোচরদের নিয়ে মহাকাশ অভিযানের পরীক্ষামূলক অংশ হিসেবে তাদের একটি টেস্টও করার কথা চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর গায়ে 'কালো ছোপ'! 'অভূতপূর্ব' এক দৃশ্য ধরা পড়ল নাসার ক্যামেরায়