নয়াদিল্লি: মহাকাশ গবেষণার জগতে এবার আত্মনির্ভর হতে চলেছে ভারত। মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন গড়তে চলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO. ভারতের স্পেস স্টেশনের নাম হবে 'ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন' (BAS). ভারতের নিজস্ব স্পেস স্টেশন থাকলে, মহাকাশ গবেষণায় আর অন্য কোনও দেশের উপর নির্ভর করতে হবে না। (Bharatiya Antariksha Station)
ISRO জানিয়েছে, ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশনের ওজন হবে প্রায় ৫২ টন। একেবারে প্রথম পর্যায়ে তিন জন মহাকাশচারী সেখানে থেকে গবেষণা চালিয়ে যেতে পারবেন। পরবর্তীতে ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশনের ভারবহন ক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে ছ'জন মহাকাশচারী সেখানে থেকে গবেষণা চালিয়ে যেতে পারবেন। (ISRO News)
বেঙ্গালুরুতে UR Rao Satellite Centre-এ কন্নড় টেকনিক্যাল সেমিনার চলাকালীন এই ঘোষণা করে ISRO. বলা হয়েছে, ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশনে আন্তঃগ্রহ গবেষণা চলবে। গবেষণা তলবে ওষুধ এবং বিজ্ঞানের অন্য বিষয় নিয়েও। প্রাথমিক পর্যায়ে মহাকাশ ভ্রমণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সেটি পরিষেবা দেবে। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে সেখান থেকে রসদ সংগ্রহ করা যাবে।
ISRO জানিয়েছে, মহাকাশে দীর্ঘমেয়াদি বাসস্থান গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এতে দীর্ঘমেয়াদি অভিযানও চালানো যাবে, পাশাপাশি, গবেষণার কাজও সহজতর হবে। মাধ্যকর্ষণ শক্তির বাইরে, মহাকাশে মানুষের শরীরে কী প্রভাব পড়ে, তা গবেষণা করে দেখা হবে সেখানে। পাশাপাশি, ভিনগ্রহীদের সন্ধানেও সেখান থেকে গবেষণা চলবে।
যত সময় যাচ্ছে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্র ততই উন্মোচিত হচ্ছে। বাণিজ্যিকরণ ঘটছে মহাকাশ গবেষণার। বেসরকারি সংস্থাগুলি মহাকাশ গবেষণায় এগিয়ে আসছে। পৃথিবীর বাইরে বিকল্প বাসস্থানের সন্ধানেও নাম লেখাচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা, চিন, রাশিয়া, জাপানের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ভারতও।
২০৩৫ সালে মধ্যে মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন, ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে ISRO-র। এর পর, ২০২৪ নাগাদ চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। গগনযানের আওতায় মোট আটটি অভিযান চালানো হবে। ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই আটটি অভিযান সেরে ফেলাই লক্ষ্য। আর ওই সময়ের মধ্যেই BAS-1 উৎক্ষেপণও করা হবে। ভূপৃষ্ঠের ৪০০ কিলোমিটার উপরে স্পেস স্টেশনটির নির্মাণ হবে।
চন্দ্রযান, সৌরযান অভিযানে বিপুল সাফল্যের পর মহাকাশ গবেষণায় বিশ্বের তাবড় দেশকে টেক্কা দিচ্ছে ভারত। এতে ISRO-কে সহযোগিতা করছে শিল্পজগৎ, শিক্ষাজগৎ এবং অন্যরাও। ২০২৬ সালের মধ্যে গগনযানের আওতায় চারটি অভিযান সেরে ফেলার লক্ষ্য রয়েছে। এর পর স্পেস স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হবে।