নয়াদিল্লি: মাসের পর মাস মহাশূন্যে ভেসে থাকা। দূর থেকে পৃথিবীর দর্শন মিললেও, ছোঁয়ার উপায় থাকে না। অভিযান চলাকালীন মহাকাশে ভাসমান আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনই আস্তানা হয়ে ওঠে নভোশ্চরদের। কিন্তু মাসের পর মাস মহাকাশে যে থাকেন তাঁরা, এত খাবার কি আগে থেকে মজুত করা থাকে? মহাকাশে কী ধরনের খাবার খান নভোশ্চররা? আটদিনের অভিযানে গিয়ে মহাকাশে কয়েক মাস আটকে যাওয়া সুনীতা উইলিয়ামস এবং ব্যারি বুচ উইলমোরের ক্ষেত্রে বিশেষ করে এই প্রশ্ন জোরাল হয়ে উঠেছে। এর উত্তর দিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. (Food at International Space Station)
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সবসময়ই গবেষণার কাজ চলে। নভোশ্চররা মাসের পর মাস সেখানে কাটান। তাঁদের খাওয়া-দাওয়া, পছন্দ-অপছন্দের খেয়াল রাখে NASA. রাশিয়াও নভোশ্চরদের জন্য খাবার সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। NASA জানিয়েছে, প্রত্যেক নভোশ্চরের জন্য, দিনপিছু ১ কেজি ৭২ গ্রাম ওজনের খাবার বরাদ্দ করা হয়। সেই মতো প্যাকেটবন্দি খাবার মজুত পাঠানো হ. একসঙ্গে, যা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের ফ্রিজে মজুত করা থাকে। এর পাশাপাশি, অতিরিক্ত খাবারও মজুত করা থাকে, যাতে কোনও কারণে অভিযান দীর্ঘায়িত হলেও অনাহারে থাকতে না হয় নভোশ্চরদের। (Science News)
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে নভোশ্চররা যাতে পুষ্টিকর খাবার পান, তার জন্য বিবিধ পদ পাঠানো হয় পৃথিবী থেকে। মাছ, মাংস, পিৎজাও পাঠানো হয়। তাজা শাক-সবজি, ফল যায় হিউস্টনের জনসম স্পেস ফুড সিস্টেমস ল্যাবরেটরি থেকে। প্রতি তিন মাস অন্তর নয়া রসদ পাঠানো হয় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। তিন মাসই তাজা ফল, শাক-সবজি পান না নভোশ্চররা। ফ্রিজে রাখা ফল, শাক-সবজিই খেতে হয় তাঁদের। ফুড ওয়ার্মারে খাবার বের করে খান তাঁরা। ডিম, মাংস পৃথিবী থেকেই রান্না করে পাঠানো হয়। ক্যাসেরোল, স্যুপ গরম জল ঢেলে খেতে হয়। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের ট্যাঙ্কে ৫৩০ গ্যালন জল থাকে। পাশাপাশি, নভোশ্চরদের ঘাম, প্রস্রাবও শোধন করে পরিশ্রুত জলে পরিণত করা হয়।
গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আটকে রয়েছেন সুনীতা এবং ব্যারি। সম্প্রতি একটি ছবি দেখে তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ ছড়ায়। যদিও তিনি সুস্থ আছেন বলেই জানিয়েছেন সুনীতা। NASA জানিয়েছে, মহাকাশে ধাতব পাত্রে খাওয়াদাওয়া সারেন সুনীতা এবং ব্যারি। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার কথা। ততদিনে খাবারে ঘাটতিও পড়বে না বলে জানা গিয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে পছন্দ মতো খাবারের অর্ডারও দিতে পারেন নভোশ্চররা। সুনীতা এবং ব্যারির ক্ষেত্রে ডায়েটে রয়েছে পিৎজা, রোস্ট চিকেন, প্রন ককটেল, সিরিয়েল, গুঁড়ো দুধ, টুনা মাছ। তবে তাজা নয়, ফ্রিজের খাবারই খেতে হচ্ছে তাঁদের। NASA জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে সুনীতা এবং ব্যারির স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই।