নয়াদিল্লি: পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁলেও জাপানের চন্দ্রযানকে ঘিরে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে জাপানের চন্দ্রযান Smart Lander for Investigating Moon (SLIM). তার পর ১০ দিন হতে চললেও, চাঁদে বুকে এখনও অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে পারেনি SLIM. এমনকি নিজেকে সক্রিয় রাখতে চার্জও গ্রহণ করতে পারছে না। কেমন এই সমস্যা, তার কারণ জানা গেল এবার। জানা গিয়েছে, চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ইতিহাস গড়েছে SLIM. কিন্তু চাঁদের মাটিতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নেই SLIM, বরং চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে তার নাক। অর্থাৎ উল্টো হয়ে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে SLIM, তার জেরেই এত সমস্যা। (Japan Moon Lander)


গত ১৯ জানুয়ারি পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁতে সফল হয় SLIM, তার জেরে চাঁদের পৌঁছনো পঞ্চম দেশ হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে জাপান। কিন্তু চাঁদের মাটি ছোঁয়ার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই SLIM-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এই মহাকাশযান। সৌর প্যানেলে কোনও সমস্যার জন্যই এমনটা ঘটেছে বলে প্রথমা ধারণা জন্মায় জাপানের বিজ্ঞানীদের। কিন্তি এবার আসল কারণ জানা গেল। (SLIM)


আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র পাঠানো Lunar Reconnaissance Orbiter ইতিমধ্যেই SLIM-এর অবস্থান চিহ্নিত করতে সফল হয়েছে। এবার চাঁদের বুকে উল্টো হয়ে পড়ে থাকা SLIM-এর ছবি সামনে এল। SLIM যখন চাঁদের মাটি ছোঁয়, তার সঙ্গী একটি রোবট ল্যান্ডার থেকে আলাদা হয়ে যায়। ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে, বিজ্ঞানীদের সে ব্যাপারে অবগত করিয়েছে Sor-Q নামের ওই রোবটই। ক্যামেরায় ছবি তুলে সে দেখিয়েছে, চাঁদের মাটিতে উল্টো হয়ে পড়ে রয়েছে SLIM. তাই তার সৌর প্যানেলে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারছে না। 



আরও পড়ুন: World Without Oxygen: মাত্র ১০ সেকেন্ড অক্সিজেন না থাকলেই ঘটবে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাগুলি ! সবটা জানলে শিউরে উঠবেন


জাপান এ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (JAXA) জানিয়েছে, এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মূল ইঞ্জিনটির উপর প্রভাব পড়েছে। যে কারণে সৌর প্যানেলগুলি চার্জ হচ্ছে না। তবে ব্যাটারি পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত যে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছিল SLIM, যে যে ছবি তুলেছিল, সেগুলি হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন JAXA-র বিজ্ঞানীরা। কিন্তু SLIM-এর এমন অবস্থা হল কী করে? চাঁদের মাটিতে পা রাখার পরিবর্তে, উল্টে গেল কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর জন্য SLIM-এর দুই মূল থ্রাস্টারকে দায়ী করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, সেগুলি সঠিক ভাবে কাজ না করাতেই, উল্টো হয়ে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে SLIM.


আমেরিকা, পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন, চিন এবং ভারতের পর জাপানই চাঁদের মাটি ছোঁয়া পঞ্চম দেশ। চাঁদের বুকে শিওলি গহ্বরের কিনারায় অবতরণ করেছে SLIM. সেখানে উল্টো হয়ে পড়ে থাকা SLIM-এর ছবি তুলেছে তার সঙ্গী Sora-Q রোবট। ছবি তোলার পর, SLIM-এর আর এক সঙ্গী Lunar Excursion Vehicle 1(LEV-1) মারফত সেটি পৃথিবীতে পাঠায় Sora-Q. তবে চাঁদের বুকে SLIM উল্টো হয়ে পড়ে থাকলেও, আশা ছাড়ছেন না জাপানের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, সূর্যের আলো সৌর প্যানেলের উপর এসে না পড়া পর্যন্ত শীতঘুমে রয়েছে SLIM. কোনাকুনি সূর্যরশ্মি এসে পড়লেই আবার প্রাণ ফিরে পাবে সে, ডিগবাজি খেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।