কলকাতা: অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাল জাপানের চন্দ্রযান Smart Lander for Investigating Moon (SLIM). নিরাপদ অবতরণ করতে গিয়ে চাঁদের বুকে মুখ থুবড়ে পড়লেও, চাঁদের মাটিতে দুই চন্দ্রনিশি নিরাপদেই কাটিয়ে দিল SLIM. যন্ত্রাংশের কিছুই ঠান্ডায় জমে অকেজো হয়ে যায়নি। বরং পৃথিবী থেকে পাঠানো সিগনালে সাড়া দিয়েছে। (SLIM Moon Lander)
গত বছর সেপ্টেম্বরে পৃথিবী থেকে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেয় জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা Japan Aerospace Exploration Agency (JAXA)-র চন্দ্রযান SLIM. এ বছর ১৯ জানুয়ারি সেটি চাঁদের মাটি ছোঁয়। কিন্তু চাঁদের মাটিতে নামার সময়ই বিপত্তি বাধে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরিবর্তে মুখ থুবড়ে পড়ে সেটি। সেই থেকে চাঁদের মাটিতে উল্টো হয়েই পড়ে রয়েছে SLIM. (Science News)
কিন্তু সেই অবস্থাতেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল SLIM. সূর্যের আলো থেকে শক্তি সঞ্চয় করে, একটি গহ্বর থেকেই উচ্চশক্তিসম্পন্ন ক্যামেরার মাধ্যমে সেটি পর্যবেক্ষণ চালায়। চাঁদের বুকে অন্ধকার নেমে এলে গভীর নিদ্রায় ডুব দেয় SLIM. চাঁদের মাটিতে রাত কাটানোর উপযুক্ত করে তোলা হয়নি SLIM. তাই সূর্যের আলো ফুটলে তার কাছ থেকে সাড়া পাওয়ার কোনও আশাই রাখেননি বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু পৃথিবী থেকে সিগনাল পাঠানো হলে সাড়া দেয় SLIM. অর্থাৎ চাঁদের মাটিতে নিশিযাপন করেও বেঁচে রয়েছে সেটি। ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে রাত কাটিয়ে বেঁচে উঠতে পারেনি। কিন্তু একবার নয়, চাঁদের মাটিতে দু’-দু’টি চন্দ্রনিশি কাটিয়েও বেঁচেবর্তে রয়েছে SLIM. আবারও সেটিকে গবেষণার কাজে লাগানো হচ্ছে।
তাই চাঁদের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়লেও, দুই চন্দ্রনিশি চাঁদের মাটিতে কাটিয়ে দেওয়া SLIM জাপানকে বড় সাফল্য এনে দিয়েছে। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় SLIM-এর তোলা একটি ছবিও পোস্ট করেছে JAXA.
গত ১৯ জানুয়ারি SLIM-এর নাক চাঁদের মাটি ছোঁয়। উল্টো হয়ে পড়ে সেটি। ২০০ কোজি ওজনের SLIM-এরসঙ্গে মাঝে যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু ২৮ জানুয়ারি জেগে ওঠে সেটি। এর পর পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিনের চন্দ্রনিশির আগে SLIM-কে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় চাঁদের তাপমাত্রা প্রায় -১৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল। কিন্তু ২৫ ফেব্রুয়ারি আবারও জেগে ওঠে SLIM. তার পর আবারও নিশিযাপন এবং ২৬ মার্চ আবারও জেগে উঠল সেটি।