নয়াদিল্লি: দীর্ঘ ৫৩ বছর মহাকাশে কাটানোর পর পৃথিবীতে ফিরে এল Kosmos 482. গভীর রাতে আছড়ে পড়ল ভারত মহাসাগরের বুকে। শুক্রযানের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা জানিয়েছে রাশিয়ার Roscosmos. মহাকাশযানটি আছড়ে পড়ে কোনও ক্ষয়তি হয়নি, কেউ আহত হননি বলে জানিয়েছে তারা। তবে আস্ত অবস্থায় ভারত মহাসাগরে সেটি আছড়ে পড়েছে, না কি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে, তা এখনও অস্পষ্ট। (Kosmos 482)

১৯৭২ সালে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন Kosmos 482 মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণ করে। শুক্রগ্রহের মাটি স্পর্শ করে সেখান থেকে পৃথিবীতে তথ্য পাঠানোর কথা ছিল মহাকাশযানটির। কিন্তু পৃথিবীর মাটি ছেড়ে মহাকাশে পৌঁছতে পারলেও, শুক্রের মাটি ছুঁতে পারেনি Kosmos 482. আবার পৃথিবীতে ফেরাও হয়নি তার। গত ৫৩ বছর ধরে ছন্নছাড়া অবস্থায় মহাকাশে বিরাজ করছিল সেটি। (Science News)

পৃথিবীর সঙ্গে সূর্যের অনেক মিল রয়েছে শুক্রগ্রহের। দুই গ্রহের জন্মও প্রায় একই সময়ে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই কারণেই শুক্রগ্রহ অভিযানের সূচনা। ঠিক হয়েছিল, Kosmos 482 মহাকাশযানের ল্যান্ডারটি শুক্রের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ করবে। পরখ করে দেখবে মাটির অবস্থা। কিন্তু যেমন পরিকল্পনা তেমন কাজ হয়নি। মহাকাশযানের উপরের বুস্টারটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ ঘটে। 

ফলে পৃথিবীর মাটি ছেড়ে রকেটটি উড়ে গেলেও, সাকুল্য ৮০০০ মাইলও পেরোতে পারেনি। অর্থাৎ মহাকাশে পৌঁছলেও, শুক্রগ্রহে পৌঁছনোর সিকিভাগ দূরত্বও অতিক্রম করতে পারেনি। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাইরে বেরোতে যে শক্তির প্রয়োজন ছিল, তা সঞ্চার করতে পারেনি বুস্টারটি। এর ফলে মহাকাশেই কার্যত নির্বাসন জীবনে প্রবেশ করে Kosmos 482. 

ছয়ের দশক মহাকাশ অভিযান ঘিরে কার্যত ইঁদুর দৌড় শুরু হয়। আর সেই দুই ইঁদুর দৌড়ের প্রধান দুই চরিত্র ছিল আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। সেই সময় শুক্রগ্রহের উদ্দেশে একাধিক মহাকাশযান পাঠায় সোভিয়েত ইউনিয়ন, যার মধ্যে বেশ কিছু সফলও হয়েছিল, যেমন, Verna 7, Verna 8. সেগুলিকে শুক্রের মাটি ছোঁয়ানো গিয়েছিল। ৫০ মিনিট ধরে তথ্য় পাঠানোর পর, শুক্রের বুকে পুড়ে ছাই হয়ে যায় Verna 8.