নয়াদিল্লি: পৃথিবীর বাইরে, মহাশূন্যে দিব্যি ফসল ফলানো গিয়েছে। কিন্তু সাফল্য উদযাপনের পর আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছিল নিমেষে। কারণ পরিশ্রম করে ফলানো দু’টি টমেটো বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল। হন্য হয়ে খুঁজলেও, হদিশ মেলেনি তাদের। তাতে সতীর্থের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন মহাকাশচারীরা। লোভ সামলাতে না পেরে, তিনি টমেটো দু’টি পেটে চালান করে দিয়েছিলেন, বিপাকে পড়ে মিথ্যে বলছেন বলে সন্দেহ হয় সকলেরই। অবশেষে চুরি করে খাওয়ার দায় থেকে মুক্ত হলেন অভিযুক্ত। এক বছর পর ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়া দুই টমেটো ফিরে পেলেন মহাকাশচারীরা। (ISS Rogue Tomatoes)


২০২২ সালে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র মহাকাশচারীরা  আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ফসল ফলিয়ে নজর গড়েন, তার মধ্যে ছিল টমেটোও। মহাশূন্যে ফলানো সেই টমেটো নিয়ে পরের গবেষণার কাজ শুরু করতে যান NASA-র মহাকাশচারী ফ্র্যাঙ্ক রুবিও। কিন্তু মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অনুপস্থিতিতে, দু’টি টমেটো হারিয়ে ফেলেন তিনি। মহাশূন্যে ফলানো প্রথম টমেটো হারিয়ে ফেলায় তাঁর উপর চটে যান সতীর্থরা। লোভ সামলাতে না পেরে টমেটো দু’টি তিনি পেটে চালান করে দিয়েছেন এবং বিষয়টি চাপা দিতে মিথ্যে বলছেন বলে অভিযোগ ওঠে। (Science News)


সতীর্থদের এই অভিযোগে আহত হয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্ক। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে কার্যকাল শেষ হওয়ার পর বাড়িও ফিরে আসেন তিনি। সময়ের সঙ্গে ‘নিখোঁজ’ টমেটোর খোঁজে চলা তদন্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে হঠাৎই ‘নিখোঁজ’ দু’টি টমেটোর খোঁজ মেলে। তাতেই দোষমুক্ত হলেন ফ্র্যাঙ্ক।


আরও পড়ুন: Treasure Discovered in Pakistan: ঘড়াভর্তি মুদ্রার এক পিঠে রাজা, অন্য পিঠে শিব, পাকিস্তানের মহেঞ্জোদারোয় উদ্ধার কুষাণ যুগের ‘গুপ্তধন’


সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “যতদূর মনে পড়ে, আমি ভেলক্রো বসিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি টমেটো দু’টি নেই। তার পর প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে টমেটো দু’টিকে তন্নতন্ন করে খুঁজি। নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করতেও চেয়েছিলাম আমি। আমি যে খেয়ে নিইনি, তা প্রমাণের তাগিদ ছিল। প্রথম বার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে টমেটো ফলানোয় যত গর্ব হয়েছিল, টমেটো দু’টি হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা ছিল আরও বেশি।”


টমেটো ফিরে পাওয়ার খবর জানাতে গিয়ে ফ্র্যাঙ্ককে ভুল বোঝা হয়েছিল, তিনি টমেটো খেয়ে নেননি বলে স্বীকারও করে নিয়েছে NASA. তারা জানিয়েছে, এক বছর পর খোঁজ মিললেও, রং ফ্যাকাশে হওয়া যাওয়া ছাড়া, টমেটো দু’টির মধ্যে কোনও ফাঙ্গাস বা জীবাণু পাওয়া যায়নি। তবে টমেটো দু’টিকে পৃথিবীতে আর ফিরিয়ে আনা হবে না।