নয়াদিল্লি: মঙ্গলগ্রহ থেকে ছিটকে পৃথিবীতে এসে পড়েছিল। লালগ্রহের সেই পাথর রেকর্ড দামে বিক্রি হল নিলামে। ৫.৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে ওই উল্কাখণ্ডটি, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৪৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। পৃথিবীর বুকে মঙ্গলগ্রহ থেকে আসা সবচেয়ে বড় উল্কাখণ্ড সেটিই। (Mars Rock Auctioned)
আমেরিকার নিলাম সংস্থা Sotheby’s বুধবার নিউ ইয়র্কে নিলামের আয়োজন করে। সেখানেই পাথরটি রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলগ্রহের ওই পাথরটির নাম রাখা হয় NWA 16788. সেটির ওজন প্রায় ২৪.৫ কিলোগ্রাম। কিন্তু মঙ্গল গ্রহের পাথর কেন নিলামে তোলা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। (Science News)
ধূমকেতু, গ্রহাণু বা উল্কাবৃ্ষ্টি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে, তাদের যেটুকু অংশ বেঁচে থাকে, তাকে বলা হয় উল্কাখণ্ড। মঙ্গলগ্রহের যে NWA 16788 পাথরটি নিলামে বিক্রি হল, সেটি একেবারে আলাদা। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে নাইজারের প্রান্তিক আগাদেজ অঞ্চলে সেটির খোঁজ মেলে। পৃথিবীতে এতদিন পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহ থেকে যত উল্কাখণ্ড আছড়ে পড়েছে, তার মধ্যে এটি আকারে প্রায় ৭০ শতাংশ বড়। পৃথিবীতে সবমিলিয়ে ৪০০টি মঙ্গলগ্রহের উল্কাখণ্ড পাওয়া গিয়েছে।
Sotheby’s-এর সায়েন্স অ্যান্ড ন্যাচরাল হিস্ট্রি বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ক্যাসান্ড্রা হ্যাটন জানিয়েছেন, NWA 16788-এর আবিষ্কার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীতে প্রাপ্ত লালগ্রহের বৃহত্তম উল্কাখণ্ড, যা নিলামে উঠেছে। গায়ের লাল রংটি এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
গবেষণায় এখনও পর্যন্ত যে তথ্য় উঠে এসেছে, সেই অনুযায়ী, কোনও ভাবে মঙ্গলগ্রহের বুক থেকে ছিটকে বেরিয়ে যায় ওই প্রস্তরখণ্ড। গ্রহাণুর আঘাতেই সেটি মহাশূন্যে ছিটকে বেরিয়ে আসে এবং তার আঘাতে উল্কাখণ্ডটির শরীর কাচের মতো চকচকে হয়ে ওঠে। এর পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে আরও চকচকে হয়ে ওঠে সেটি।
কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ উল্কাখণ্ড নিলামে তোলা হল কেন, কেন গবেষণার কাজে দান করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবরার অধ্যাপক স্টিভ ব্রুসেট বলেন, “কোনও ধনকুবেরের সিন্দুকে ওই উল্কাখণ্ড গেলে, তার চেয়ে বেশি লজ্জার কিছু হয় না। ওটির জায়গা মিউজিয়ামে, যাতে গবেষণা চালানো যায়, সকলে সেটি চাক্ষুষ করতে পারেন।”
তবে এই প্রথম নয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মঙ্গল গ্রহ থেকে ছিটকে আসা আরও একটি উল্কাখণ্ড এসে পড়ে পৃথিবীতে। Christie’s নিলামে তোলা হয় সেটিকে। বিক্রি হয় ২ লক্ষ ডলারে।