নয়াদিল্লি: চাঁদের বুকে উপনিবেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে। বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা তো বটেই, বেসরকারি সংস্থাগুলিও সেই লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কিন্তু উপগ্রহের বুক থেকে এবার উদ্বেগজনক খবর সামনে এল। চাঁদের মাটির নিচে চ্যুতিরেখার হদিশ পেলেন বিজ্ঞানীরা, যা কিনা ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং ধসের জন্য দায়ী। (Shrinking Moon)


এই মুহূর্তে চাঁদের দক্ষিণ মেরু ছুঁতে উঠেপড়ে লেগেছে একাধিক দেশ। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র আর্টেমিস মিশনেও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতেই চলবে। সেখানেই আগামী দিনে উপনিবেশ গড়ার পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ভৌগলিক পরিস্থিতি নিয়ে এবার বিপদবার্তা শোনালেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিরাপদ জায়গা নয়। (Moonquake and Landslides)


চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিয়ে গবেষণা চালাতে গিয়ে বিপদের ইঙ্গিত পেয়েছেন একদল বিজ্ঞানী। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০২৬ সালে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যেখানে আর্টেমিস-৩ মহাকাশযান নামানোর কথা ভাবছে NASA, সেখানে মাটির নিচে দীর্ঘ চ্যুতিরেখা রয়েছে। ওই চ্যুতিরেখার ওঠারপড়ার দরুণই ৫০ বছর আগে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়েছিল চাঁদের বুকে।




আরও পড়ুন: Neuralink Brain Chip: আলো ফুটবে দৃষ্টিহীনের চোখে, সাড়া দেবে অসাড় শরীর! প্রথম বার মানুষের মস্তিষ্কে মাইক্রোচিপ বসালেন মাস্ক


এর আগে, অ্যাপোলো অভিযানের সময় মহাকাশচারীরা চাদের বেশ কিছু সিসমোমিটার নিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালের ১৩ মার্চ চাঁদে তীব্র ভূমিকম্প হলে, ওই সিসমোমিটারগুলি কার্যত ছত্রখান হয়ে যায়। এর কয়েক দশক পর Lunar Reconnaissance Orbiter অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চ্যুতিরেখার জাল আবিষ্কার করে। বর্তমানে আরও উন্নত প্রযুক্তি হাতে এসেছে বিজ্ঞানীদের, যার মাধ্যমে ওই চ্যূতিরেখার জালের সঙ্গে তীব্র ভূমিকম্পের সংযোগ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


২৫ জানুয়ারি The Planetary Science Journal-এ যে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে যেমন ভূমিকম্প হয়, চাঁদের মাটিও একই ভাবে কেঁপে ওঠে। পৃথিবীতে মাটির নিচে পাতের ওঠাপড়ার দরুণ যে চ্যুতিরেখার সৃষ্টি হয়, তা থেকেই কেঁপে ওঠে মাটি। চাঁদের ক্ষেত্রে সঙ্কোচনকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, চাঁদের অন্তস্থল সঙ্কুচিত হওয়াতেই চ্যুতিরেখার সৃষ্টি।


কিন্তু তাঁদের অন্তস্থল সঙ্কুচিত হচ্ছেই বা কেন? জবাবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে চাঁদের অন্তস্থলও শীতল হচ্ছে, এর ফলে কিসমিসের মতো সঙ্কোচন ঘটছে। তার জেরেঅ অসংখ্য চ্যুতিরেখা সৃষ্টি হয়ে চলেছে।  পৃথিবীতে গাছপালা রয়েছে। পৃথিবীর মাটি যেমন আঁটসাট, চাঁদের মাটি তুলনায় আলগা। এর ফলে ভূমিকম্পের চেয়ে, সেখানে ঘন ঘন ধস নামে। তাই চাঁদের বুকে উপনিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিপদ রয়েছে বলে মত বিজ্ঞানীদের।