নাইরোবি: শরীর জুড়ে খাঁজকাটা দাগ। হেসেখেলে ১০-১২ জন দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। আকাশ থেকে এমনই ধাতব বলয় আছড়ে পড়ল কেনিয়ায়। গ্রামের একেবারে মধ্যিখানে আছড়ে পড়ল সেটি। সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে উঠল চারিদিক। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই ধাতব বলয় মহাকাশ থেকে আছড়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেটি কোনও মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ হতে পারে বলে জল্পনা। (Space Debris Crash)
দক্ষিণ কেনিয়ার মাকুয়েনি জেলার মুকুকু গ্রামের ঘটনা। গত সপ্তাহে পেল্লাই আকারের ওই ধাতব বলয়টি আছড়ে পড়ে সেখানে। পরিচিত কিছুর সঙ্গেই মেলানো যায় না ধাতব বলয়টিকে। ফলে সেটিকে দেখতে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষজ। ওই ধাতব বলয়টির উৎস খুঁজতে শুরু হয়েছে তদন্ত। কোনও মহাকাশ যান থেকে সেটি খসে পড়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন সেদেশের বিজ্ঞানীরা। (Kanya Space Debris)
কেনিয়া স্পেস এজেন্সির কাছে ওই ধাতব বলয় আছড়ে পড়ার খবর পৌঁছয়। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন লোকজন। সেটি কোনও মহাকাশযানের অংশ বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, মাটি থেকে যখন রকেট উৎক্ষেপণ হয়, মহাকাশে সেটি উৎক্ষেপণ যান থেকে আলাদা হয়ে যায়। মহাকাশযান এবং উৎক্ষেপণযানের সংযোগস্থলে ওই ধাতব বলয়টি থাকে। সেটিই মহাকাশ থেকে খসে পড়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
পৃথিবীর বুকে মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়ার ঘটনা যদিও নতুন কিছু নয়। কিন্তু এত বড় ধাতব বলয় পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে দেখা যায়নি আগে। কেনিয়া স্পেস এজেন্সির বক্তব্য, "সাধারণত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় এই ধরনের বস্তু। কখনও কখনও ফাঁকা জায়গা বা সাগর-মহাসাগরে আছড়েও পড়ে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।" স্থানীয়দের দাবি, যখন আকাশ থেকে আছড়ে পড়ে ওই ধাতব বস্তুটি, গনগনে লাল দেখাচ্ছিল সেটিকে।
তবে মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ হলেও, সেটি কোন দেশের, এখনও পর্যন্ত বোঝা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র ধ্বংসাবশেষ বলে চাউর হয়েছিল প্রথমে। কিন্তু সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে কেনিয়া স্পেস এজেন্সি।
কেনিয়া স্পেস এজেন্সি ওই ধাতব বলয়টি বাজেয়াপ্ত করেছে। সেটি আয়তনে প্রায় আট ফুট চওড়া। সেটির ওজন ৫০০ কেজি। ওই ধাতব বলয়টিকে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মহাকাশে আবর্জনার পাহাড় জমছে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা চাঁদের। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে, পৃথিবীর কক্ষপথের নিম্নভাগেই প্রায় ১৪০০০ বস্তু জমে রয়েছে, যার এক তৃতীয়াংশ আবর্জনা।