নয়াদিল্লি: আকাশভরা সূর্য-তারার মাঝে যাতায়াত গড়ে উঠেছে আগেই। এবার আকাশে জায়গা দখল করতে চলেছে মানুষের সৃষ্টি তারা বা নক্ষত্র। ২০২৯ সালের মধ্য়ে রাতের আকাশে মানুষের তৈরি ওই তারাকে মিটমিট করে জ্বলতে দেখা যাবে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA ওই তারা তৈরির কাজে হাত দিতে চলেছে। তবে সূর্য বা তারাদের টেক্কা দিতে নয়, গবেষণার প্রয়োজনই রাতের আকাশে কৃত্রিম তারা বসাতে চলেছে NASA. (NASA Artificial Star)


রাতের আকাশে কৃত্রিম নক্ষত্র বসানোর এই অভিযানের নাম রাখা হয়েছে Landolt NASA Space Mission. এর আওতায় ২০২৯ সালের গোড়ার দিকে পৃথিবীর কক্ষপথে নক্ষত্রের স্বরূপ একটি কৃত্রিম উপগ্রহ বসানো হবে, যার আয়তন হবে বড় আকারের জুতোর বাক্সের সমান। কৃত্রিম ওই নক্ষত্রে আটটি লেজার বসানো থাকবে, যার মাধ্যমে নক্ষত্রের অনুরূপ আলো নির্গত হবে। খালি চোখে দেখা না গেলেও, টেলিস্কোপের মাধ্যমে রাতের আকাশে নক্ষত্রের মতোই দেখতে লাগবে সেটিকে। (Satellite Landolt)


NASA জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে ৩৫ হাজার ৭৮৫ কিলোমিটার দূরে, পৃথিবীর কক্ষপথে ওই কৃত্রিম নক্ষত্রটিকে বসানো হবে। সেটির নামও হবে Landolt. পৃথিবীতে বসে টেলিস্কোপের মাধ্যমে যাতে আসল নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা মেলে, আসলের সঙ্গে নকলের তুলনা যাতে করা যায়, সেই লক্ষ্যেই এই কৃত্রিম নক্ষত্র তৈরির ভাবনা বলে জানা গিয়েছে। 




ছবি: জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটি।


আরও পড়ুন: Aliens: আমাদের আশপাশেই ভিনগ্রহীরা! লুকিয়ে ভিড়েই! আমরা কি নজরবন্দি?


NASA জানিয়েছে, পৃথিবীকে ঘিরে থাকা কক্ষপথে পৌঁছে গেলে ওই কৃত্রিম নক্ষত্রের গায়ে বসানো আটটি লেজার আলোই একসঙ্গে জ্বলে উঠবে। বহির্জগৎ থেকে নক্ষত্রের আলো এসে পড়লে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল তার কতটা শুষে নেয় এবং কতটা আমাদের চোখে এসে পৌঁছয়, তা পরীক্ষা করে দেখবেন বিজ্ঞানীরা। ৬০টি আসল নক্ষত্র থেকে নির্গত আলোর সঙ্গে কৃত্রিম নক্ষত্র থেকে নির্গত আলোকে পাশাপাশি রেখে পরীক্ষা চলবে। 


পৃথিবীকে ঘিরে থাকা যে কক্ষপথে বসানো হবে কৃত্রিম নক্ষত্রটিকে, সেখান থেকে পৃথিবী এবং কৃত্রিম নক্ষত্রের গতিবেগও প্রায় সমান থাকবে বলে জানা গিয়েছে। ফলে রাতের আকাশে চোখ রাখলে কৃত্রিম উপগ্রহটিকে একই জায়গায় স্থির বলে মনে হবে। প্রথম একবছর ওই জায়গাতেই কৃত্রিম নক্ষত্রটিকে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। ঔজ্জ্বল্যের নিরিখে নক্ষত্রদের ক্যাটালগ তৈরি করেছিলেন প্রয়াত বিজ্ঞানী আরলো ল্যান্ডোল্ট। তাঁর নামেই কৃত্রিম নক্ষত্রটির নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।