নয়াদিল্লি: পৃথিবীর দিকে মুখ করেই অবস্থান। লালচে, গোলাপি, ধূসর, সব রং এক পিঠেই। চাঁদের উল্টোপিঠের দর্শন থেকে পৃথিবীবাসী বঞ্চিতই। প্রযুক্তির দৌলতে চাঁদের মাটি কার্যত খুঁড়ে ফেললেও, চাঁদের উল্টোপিঠের রূপ এতদিন অধরাই ছিল। কিন্তু এবার সেই অসাধ্যসাধন করে দেখাল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA.চাঁদের উল্টোপিঠের ছবি তুলে সামনে আনল তারা। (Far Side Of Moon)
সোশ্যাল মিডিয়ায় চাঁদের উল্টোপিঠের ছবি প্রকাশ করেছে NASA. ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, 'বাড়ি থেকে চাঁদের যে পিঠ কখনও দেখিনি আমরা: দূরবর্তী পিঠ। প্রায়শই ভুল করে চাঁদের উল্টোপিঠকে 'অন্ধকার দিক' বলা হয়। কিন্তু এই কথা ভুল। কারণ পৃথিবীর দিকে মুখ করা যে দিক, তার মতোই সমান সূর্যালোক পায় চাঁদের উল্টো পিঠ'। (Moon Far Side Pics)
চাঁদের উল্টো পিঠের গঠন এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও ব্যাখ্যা করেছে NASA. তারা জানিয়েছে, চাঁদের উল্টোপিঠে গহ্বরের সংখ্যা আরও বেশি। অগ্ন্যুৎপাত থেকে নির্গত লাভার প্রলেপে বিচ্ছিন্ন সমতল রয়েছে বটে, তবে তা নামমাত্রই। ব্যাসল্ট শিলায় গঠিত, ওই সমতলকে 'মারিয়া' বলা হয়, যা আসলে লাতিন শব্দ। লাতিনে 'মারিয়া' শব্দের অর্থ সাগর। এককালে চাঁদের গায়ে কালো দাগগুলিকে সাগর-মহাসাগর বলে ভাবতেন প্রাচীন বিজ্ঞানীরা। সেই থেকেই এমন নামকরণ।
কিন্তু পৃথিবী থেকে চাঁদের উল্টোপিঠটি কেন দেখা যায় না? তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে NASA. তারা জানিয়েছে, জোয়ার-ভাঁটার দরুণ পৃথিবীর সঙ্গে বাঁধা পড়ে রয়েছে চাঁদ। ফলে পৃথিবীর দিকে মুখ করে অবস্থান সেটির। পৃথিবীর মতো চাঁদও নিজের অক্ষে ঘোরে। কিন্তু পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে যেমন প্রায় ২৭.৩২২ দিন সময় লাগে তার, তেমনই নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘুরতেও একই সময় লাগে চাঁদের। ফলে চাঁদের উল্টোপিঠটির দর্শন পান না পৃথিবীবাসী।
চাঁদের উল্টোপিঠের যে ছবি প্রকাশ করেছে NASA, তাতে ধূসর চন্দ্রপৃষ্ঠে অজস্র গর্ত চোখে পড়েছে। বড়, মাঝারি, ছোট, ক্ষুদ্র, সব আকারের গহ্বর রয়েছে চাঁদের উল্টোপিঠে। NASA জানিয়েছে, Lunar Reconnaissance Orbiter-এর ক্যামেরায় তোলা প্রায় ১৫০০০ ছবি ব্যবহার করে চাঁদের উল্টোপিঠটি পৃথিবীবাসীর সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ওই ছবিগুলি তোলা হয়েছিল।