নয়াদিল্লি: পৃথিবীর বাইরে বিকল্প জগতের খোঁজ চলছে। ভবিষ্য়তে সেখানে বসতি গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। এর জন্য মঙ্গলগ্রহ এখনও পর্যন্ত প্রথম পছন্দ বিজ্ঞানীদের। মঙ্গলকে জীবনধারণের উপযুক্ত করে তোলার প্রচেষ্টাও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেই আবহেই লালগ্রহের গতিপ্রকৃতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াল বিজ্ঞানীদের কাছে (Mars Orbit)। কারণ আচমকাই স্বাভাবিকের চেয়ে তার গতি অস্বাভাবিক রকমের বেড়ে গিয়েছে এবং দিনের দৈর্ঘ্যেও বেশ খানিকটা কমেছে বলে জানা গেল। (Science News) 


আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র (NASA) ইনসাইট ল্যান্ডার লালগ্রহের গতিবৃদ্ধির বিষয়টি সামনে এনেছে। দীর্ঘ চার বছর সেই নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে ইনসাইট। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তার কার্যকালের মেয়াদবৃদ্ধি হওয়ার পর সেটি কার্যক্ষমতা হারায়। কিন্তু তার আগে যে তথ্য সংগ্রহ করে ইনসাইট, তার বিশদ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে Nature জার্নালে। সেই তথ্যই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজ্ঞানীদের। কারণ তাতে দেখা গিয়েছে, প্রত্যেক বছর নিজের অক্ষের উপর মঙ্গলগ্রহের ঘূর্ণন ৪ মিলিয়ার্কসেকেন্ড করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে প্রত্যেক বছর লালগ্রহের উপর দিনের দৈর্ঘ্য কমে যাচ্ছে এক মিলিসেকেন্ড করে।


ইনসাইট ল্যান্ডারে বসানো রেডিও ট্রান্সপন্ডার এবং অ্যান্টেনায় বিষয়টি ধরা পড়ে। ইনসাইট থেকে প্রাপ্ত ওই তথ্য নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিল মাসা-র জেট প্রপালসন ল্য়াবরেটরি।  তারাও বিষয়টিতে সিলমোহর দিয়েছে। ঠিক কী কারণে লালগ্রহের গতির বৃদ্ধি ঘটছে, তা যদিও সুনিশ্চিত ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এর কিছু সম্ভাব্য কারণ সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে অন্যতম হল, লালগ্রহের মেরু অঞ্চলে বরফ জমছে। এর ফলে তার মোট ভরে তারতম্য ঘটছে যেমন, তেমনই খানিকটা পিছলেও যাচ্ছে। এর ফলে আইস স্কেটার যেমন দু'হাত জড়ো করে দ্রুত ঘুরতে থাকেন, একই ভাবে গতির বৃদ্ধি ঘটছে লালগ্রহেরও। এমনিতে লালগ্রহে দিনের দৈর্ঘ্য ২৪ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। তাতেই রদবদল ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে।


আরও পড়ুন: Chandrayaan 3: চাঁদের থেকে আর মাত্র ১৪৩৭ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চন্দ্রযান-৩


এখনও পর্যন্ত গভীরে গিয়ে মঙ্গলগ্রহের অন্তঃস্থলে উঁকি দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে উপরিস্থলের মাটি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে। রেডিও ডেটার সাহায্য়ে মাটির ভিতরকার গঠন সংক্রান্ত তথ্য়ও হাতে এসেছে পৌঁছেছে। তাতে বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলগ্রহের ভিতরকার অংশ এখনও তুলনামূলক নরম। গলিত লোহার অবস্থানের জন্যই এমনটা বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মঙ্গলগ্রহের মাটিতেও কম্পন হয় নিয়মিত। পৃথিবীর মতো মঙ্গলের অন্তঃস্থলও দ্বিস্তরীয় বলে মত বিজ্ঞানীদের।