নয়াদিল্লি: মাত্র কয়েক দিন কাটানোর কথা ছিল মহাকাশে। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আরও বেশ কয়েক মাস আটকে থাকতে হবে। সেই অবস্থায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস মহাকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সুনীতা এবং তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোরের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ দুই নভোশ্চরই। (Sunita Williams)
মাত্র আটদিনের অভিযানে মহাকাশে রওনা দিয়েছিলেন সুনীতা এবং ব্যারি। কিন্তু যে মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে রওনা দেন তাঁরা, সেটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত ফেরা হয়নি তাঁদের। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের আগে তাঁদের পৃথিবীতে ফেরানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. সেই অবস্থাতেই দু'জনের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগজনক খবর সামনে এল। (Sunita Williams Health Updates)
এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে রয়েছেন সুনীতা এবং ব্যারি। সম্প্রতি সেখান থেকে তাঁদের কিছু ছবি সামনে এসেছে, যেখানে দু'জনকেই শীর্ণকায় দেখাচ্ছে। তাঁরা অসুস্থ বলে মনে হচ্ছে ছবি দেখে। দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকার দরুণ তাঁদের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে, শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে খবর সামনে এসেছে। সুনীতা ও ব্যারির ওই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
জানা গিয়েছে, মহাকাশে অনেকটা ওজন কমে গিয়েছে সুনীতা এবং ব্যারির। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাইরে দীর্ঘ সময় টিকে থাকার ধকল সইতে পারছেন না দু'জনেই। আমেরিকার বিশেষজ্ঞদের মতে, সুনীতার গাল চুপসে গিয়েছে। পর্যাপ্ত ক্যালরি যে শরীরে যাচ্ছে না, তা স্পষ্ট। মহাকাশে যেহেতু মাধ্যকর্ষণ নেই, তাতে পেশির ক্ষয় হয়। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়াতেও শরীরের ক্ষতি হচ্ছে। দীর্ঘদিন এভাবে থাকলে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও হতে পারে। কমে যেতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত প্রয়োজন। সুনীতা এবং ব্যারি যেহেতু সেই সব সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না, তাঁদের শরীরে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। (Sunita Williams)
এমন পরিস্থিতিতে সুনীতা এবং ব্যারির স্বাস্থ্য নিয়ে মুখ খুলেছে NASA. তাদের দাবি, সুনীতা এবং ব্যারি সুস্থই আছেন। কিন্তু NASA-র দাবি মনে ধরছে না কারও। কারণ সম্প্রতি মহাকাশ থেকে যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে একেবারে অস্থিচর্মসার চেহারা চোখে পড়েছএ সুনীতার। এত উঁচুতে দীর্ঘদিন থাকার পর তাঁর চেহারায় ধকল স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকেই। মুখও একেবারে শুকিয়ে ছোট হয়ে গিয়েছে বলে মত কারও কারও।
উদ্বেগ আরও বাড়ছে কারণ, সম্প্রতি মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরেন NASA-র নভোশ্চর ম্যাথু ডমিনিক, মাইকেল বারাট, জেনেট এপস এবং রাশিয়ার নভোশ্চর আলেকজান্ডার গ্রেবেনকিন। পৃথিবীতে অবতরণের পর তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একজন গুরুতর অসুস্থ বলে ধরা পড়ে। তাঁকে হাসপাতালেই ভর্তি রাখা হয়। ঠিক কী হয়েছে তাঁর, তা যদিও খোলসা করা হয়নি। পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ওই নভোশ্চর। সুনীতা এবং ব্যারিকে নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।