নয়াদিল্লি: মহাকাশ গবেষণার জগতে নয়া মাইলফলক তৈরি হল এবার। বেসরকারি সংস্থার তরফে মহাশূন্যে স্পেসওয়াকের নজির গড়লেন ধনকুবের। বৃহস্পতিবার এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলেন পৃথিবীবাসী। সেই বিশেষ মুহূর্তের যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তা অভূতপূর্ব। মুহূর্তের মধ্যে সেগুলি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। (Spacewalk by SpaceX)


মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে, মহাশূন্যের বুকে যখন বিচরণ করেন নভোশ্চররা, তাকে বলা হয় স্পেসওয়াক। ইংরেজিতে স্পেসওয়াক Extravehicular Activity (EVA) নামেও পরিচিত। বৃহস্পতিবার ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭০০ কিলোমিটার উচ্চতায়, এই মহাজাগতিক ইতিহাস রচিত হয়। ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা SpaceX-এর Polaris Dawn অভিযানে এই সাফল্য জুড়ে গিয়েছে। (Polaris Dawn Mission)


তবে যিনি এই অসাধ্যসাধন করেছেন, তিনিও কোনও অংশে কম নন। ধনকুবের জ্যারেড আইজ্যাকম্যান মহাকাশযানের বাইরে বেরিয়ে আজ মহাশূন্যে বিচরণ করেন, যা কোনও বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত প্রথম স্পেসওয়াক হিসেবে নথিভুক্ত হয়ে গেল মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে।



৪১ বছর বয়সি জ্যারেড Shift4 পেমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা। Polaris Dawn অভিযাবের কমান্ডারও তিনি।  আজ Crew Dragon মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তাঁর পিছু পিছু বেরিয়ে আসেন সারা গিলিস। সারা SpaceX-এর ইঞ্জিনিয়ার এবং জ্যারেডের সহযাত্রী। এই স্পেসওয়াকের একটিই লক্ষ্য ছিল, SpaceX-এর নয়া স্পেসস্যুট পরীক্ষা করে দেখা। আগামী দিনে চাঁদ এবং মঙ্গলের বুকে এই স্পেসস্যুট কাজে লাগবে বলে জানা গিয়েছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, নীল-সাদা পৃথিবী রয়েছে সম্মুখভাগে। নিকশ কালো অন্ধকারে দুলছে ক্যামেরা। ধীরে ধীরে মহাকাশযানের উপরের ঢাকনাটি খোলে এবং বেরিয়ে আসেন জ্যারেড। ঝুঁকে নীচের দিকেও তাকান তিনি। সামনে উজ্জ্বল পৃথিবীকে দেখে উল্লাসে মৃষ্টিবদ্ধ হাতটি তোলেন।


স্পেসওয়াকের আগে নিজেকে প্রস্তুত করেন জ্যারেড। স্পেসস্যুটটির নমনীয়তা পরীক্ষা করে দেখতে বিভিন্ন ভঙ্গিতে হাত-পা নাড়ান তিনি।  মহাকাশযানের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ছিলেন জ্যারেড এবং সারা। স্থিতিশীলতা বজা রাখতে Skywalker নামের হ্যান্ড রেল প্রযুক্তিও ব্যবহার করেন। জ্যারেড এবং সারা ১২ মিনিট করে মোট ২৪ মিনিট মহাকাশযানটির বাইরে ছিলেন। মহাকাশযানের অন্দর থেকে সবকিছু পরিচালনা করেন স্কট পোটিট এবং অ্যানা মেনন। 


মহাকাশ অভিযান নিয়ে নিজের উচ্চাকাঙ্খা কখনও গোপন করেননি মাস্ক। এই অভিযান তাঁর সেই উচ্চাকাঙ্খা পূরণের রাস্তা প্রশস্ত করল আরও। শীঘ্রই মহাকাশে মানব অভিযান চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে মাস্কের সংস্থার। Polaris Dawn অভিযানটি Polaris Proggrame-এর অন্তর্গত তিনটি পরিকল্পিত উড়ানের মধ্যে প্রথমটি। Apollo যুগের পর পৃথিবীর কক্ষপথের সবচেয়ে উপরে গিয়ে ইতিমধ্যেই রেকর্ড গড়েছে এই অভিযান। মহাকাশে বাণিজ্যিক উড়ানের জন্য আগামী দিনে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবে তারা।