নয়াদিল্লি: হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার কথোপকথনে নয়, এবার আকাশে ফুটে উঠবে ‘Smiley’. আগামী ২৪-২৫ এপ্রিল বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী থাকবে গোটা পৃথিবী। এর নেপথ্য়ে রয়েছে মহাজাগতিক কার্যকারণ, যা বিশদে ব্যাখ্য়া করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

২৪-২৫ এপ্রিল ভোরের আকাশে মহাজাগতিক ‘Smiley’টি দেখা যাবে বলে জানা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ত্রিমুখী সংযোগ ঘটতে চলেছে। সৌরজগতের দুই গ্রহ, শুক্র এবং শনিকে দেখা যাবে পাশাপাশি অবস্থানে। তাদের ঠিক নীচে দর্শন মিলবে চাঁদের অর্ধেক অংশকে, যা ‘Smiley’-র আকারে ধরা পড়বে আমাদের চোখে। 

NASA জানিয়েছে, ২৪-২৫ এপ্রিল ভোর ভোর পূর্ব দিগন্তে ওই ‘Smiley’ দেখা যাবে। খালিচোখেই বোঝা যাবে, তবে টেলিস্কোপ থাকলে একেবারে স্পষ্ট হয়ে ধরা দেবে শুক্র এবং শনি। টেলিস্কোপ থাকলে চাঁদের নীচে বুধকেও দেখা যেতে পারে বিন্দুর আকারে। তবে দিগন্তের একেবারে নীচের দিকে অবস্থান করলে, সব জায়গা থেকে বুধকে দেখা নাও যেতে পারে। 

মহাকাশ বিজ্ঞানের জগতে এই ত্রিমুখী সংযোগ অত্যন্ত বিরল। দুই বা ততোধিক মহাজাগতিক বস্তুসমূহ আকাশে যখন কাছাকাছি অবস্থান করে, তখনই সংযোগ ঘটে। দুইয়ের বেশি মহাজাগতিক বস্তু কাছাকাছি এসে পড়লে ঘটে ত্রিমুখী সংযোগ, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় Triple Conjunction.

আকাশ পরিষ্কার থাকলে পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকেই মহাজাগতিক ‘Smiley’ দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে আকাশও পরিষ্কার থাকতে হবে। ভোরবেলা অল্প সময়ের জন্যই ওই দৃশ্য চোখে পড়বে। এখনও পর্যন্ত ভোর ৫.৩০টাকেই আদর্শ সময় হিসেবে ধরে চলছেন বিজ্ঞানীরা। এর এক ঘণ্টা পর সূর্যোদয় হবে।

এই বিরল মুহূর্তে সাক্ষী হতে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মহাকাশপ্রেমীরা। Amature Astronomer's Association জানিয়েছে, মহাকাশের ঘটনাবলী সম্পর্কে আগ্রহী যাঁরা, তাঁদের সকলের চোখ থাকবে পূর্ব দিগন্তে। ওই দিন যাতে আকাশ পরিষ্কার থাকে, সেই কামনাই করছেন সকলে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে দেখা যাবে ওই 'Smiley'. কখন কোথায় দেখা যাবে, তার জন্য হিসেব কষে সঠিক সময় বের করে দিচ্ছে Stellarium Web নামের একটি ওয়েবসাইট।

পাশাপাশি, এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে পারেন। অন্ধকার থাকতে থাকতেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসা ভাল। পূর্ব আকাশে তাকিয়ে বসে থাকতে হবে। আকাশ পরিষ্কার থাকেল তবেই কিন্তু দেখা যাবে। পাহাড় বা উঁচু জায়গা থেকে সবচেয়ে ভাল দেখতে পারবেন। ছবি তোলার জন্য় আঁধার কেটে ভোর হওয়ার মুখের সময়টিই সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মত মহাকাশপ্রেমীদের। তাঁদর মতে, ওই সময় আস্তে আস্তে নক্ষত্রগুলি আড়াল হতে শুরু করে। শুধুমাত্র গ্রহগুলি বোঝা যায়।