নয়া দিল্লি: ভিনগ্রহীরা কি আদৌ আছে না নেই? পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধানের খোঁজ এখনও অব্যাহত। তবে এই অনুসন্ধান কে আরও জোরদার করল সাম্প্রতিক গবেষণা। কারণ, এই প্রথমবার মঙ্গল গ্রহ থেকে একটি এলিয়েন সঙ্কেত (Alien signal) পাওয়া গিয়েছে। মহাকাশে মাঝেমধ্যে রেডিও সিগন্যাল ভেসে আসে। কিন্তু এবারের সঙ্কেত কিছুট আলাদা। 


ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির ExoMars ট্রেস গ্যাস অরবিটারে (TGO) বুধবার রাত ৯ টায় মঙ্গল গ্রহের চারপাশে তার কক্ষপথ থেকে পৃথিবীতে একটি এনকোডেড বার্তা ধরা পড়েছে। সেই দুর্বোধ্য সঙ্কেত এখনও বুঝতে পারা সম্ভব হয়নি বলেই খবর। মঙ্গল গ্রহের অরবিটারে ফ্ল্যাশ হওয়া সিগন্যালটি ১৬ মিনিট পরে পৃথিবীতে পৌঁছয় বলেই জানা গিয়েছে। 


মহাকাশের সুদূর গ্যালাক্সি থেকে বারে বারেই রহস্যময় তরঙ্গ ভেসে এসেছে। কখনও সেই তরঙ্গের মাত্রা তীব্র, আবার কখনও কম, বিক্ষিপ্ত। কারা পাঠাচ্ছে এইসব সিগন্যাল? ভিনগ্রহীদের ডাক কি? এই প্রশ্নই এখন উঠছে। 'এ সাইন ইন স্পেস' প্রকল্পের শিল্পী ড্যানিয়েলা ডি পাওলিস বলেছেন, “মানবতার ইতিহাসে এমন শক্তিশালী এবং রূপান্তরকারী ঘটনার অর্থ অনুসন্ধান করছে। বহির্জাগতিক সভ্যতা থেকে
একটি বার্তা পাওয়া সমস্ত মানবজাতির জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা।" 


ড্যানিয়েলা ডি পাওলিস, যিনি সার্চ ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স (SETI) ইনস্টিটিউটের একজন শিল্পী, তিনি এই বহির্জাগতিক বার্তা ডিকোডিং এবং ব্যাখ্যা করার প্রক্রিয়াটি নিয়ে গবেষণা করার জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, মহাকাশ বিজ্ঞানী এবং শিল্পীদের একটি দলকে একত্রিত করেছেন, এমনটাই খবর। 


এদিকে, মঙ্গলে প্রাণ আছে কি না, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছেই। সেই আবহেই ন্যাশনাল সায়েন্স রিভিউতে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে মঙ্গলে একটি সমুদ্রের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। চিনের ইউনিভার্সিটি অফ জিওসায়েন্সের নেতৃত্বে গবেষকদের একটি দল হেস্পেরিয়ান পিরিয়ড, যা ৩ বিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধে একটি প্রাচীন মহাসাগর এবং এর উপকূলরেখার প্রত্যক্ষ প্রমাণ নিয়ে আলোচনা করেছে।   


মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়ার মধ্যে অবস্থিত ভাস্টিটাস বোরিয়ালিস ফর্মেশন (ভিবিএফ) এ চায়না ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সির (সিএনএসএ) ঝুরং রোভারের পাঠানো ডেটার উপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন মহাকাশ গবেষকরা। এর আগেও নাসা-র পার্সিভারেন্স রোভার এবং চিনের ঝুরং  রোভার যে খবর পাঠিয়েছিল সেখান থেকে বোঝা গিয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে নয়, মাত্র ৪ লক্ষ বছর আগেও মঙ্গলের বুক চিরে নদী প্রবাহিত হত। 


তবে এবার সে সন্ধান পেয়েছে সমুদ্রের। একটি পথ দেখা গিয়েছে, তা জলের প্রবাহমানতার দিকেই নির্দেশ করে। গবেষকরা ১০৬ জোড়া প্যানোরামিক ইমেজ থেকে ২৩টি শিলার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছেন তথ্যর সত্যতা যাচাই করতে। ঝুরং-এর মাল্টিস্পেকট্রাল ক্যামেরাও ব্যবহার করা হয়েছে জলের ন্যূনতম অস্তিত্ব বুঝতে।