নয়া দিল্লি: মঙ্গলে প্রাণ আছে কি না, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছেই। সেই আবহেই ন্যাশনাল সায়েন্স রিভিউতে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে মঙ্গলে একটি সমুদ্রের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। চিনের ইউনিভার্সিটি অফ জিওসায়েন্সের নেতৃত্বে গবেষকদের একটি দল হেস্পেরিয়ান পিরিয়ড, যা ৩ বিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধে একটি প্রাচীন মহাসাগর এবং এর উপকূলরেখার প্রত্যক্ষ প্রমাণ নিয়ে আলোচনা করেছে।                               

  


মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়ার মধ্যে অবস্থিত ভাস্টিটাস বোরিয়ালিস ফর্মেশন (ভিবিএফ) এ চায়না ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সির (সিএনএসএ) ঝুরং রোভারের পাঠানো ডেটার উপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন মহাকাশ গবেষকরা। এর আগেও নাসা-র পার্সিভারেন্স রোভার এবং চিনের ঝুরং  রোভার যে খবর পাঠিয়েছিল সেখান থেকে বোঝা গিয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে নয়, মাত্র ৪ লক্ষ বছর আগেও মঙ্গলের বুক চিরে নদী প্রবাহিত হত। 


তবে এবার সে সন্ধান পেয়েছে সমুদ্রের। একটি পথ দেখা গিয়েছে, তা জলের প্রবাহমানতার দিকেই নির্দেশ করে। গবেষকরা ১০৬ জোড়া প্যানোরামিক ইমেজ থেকে ২৩টি শিলার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছেন তথ্যর সত্যতা যাচাই করতে। ঝুরং-এর মাল্টিস্পেকট্রাল ক্যামেরাও ব্যবহার করা হয়েছে জলের ন্যূনতম অস্তিত্ব বুঝতে। 


চিনের  ইউনিভার্সিটি অফ জিওসায়েন্সেস-এর স্কুল অফ আর্থ সায়েন্সেসের অধ্যাপক এবং গবেষণার প্রধান লেখক জিয়াও লং বলেছেন, "যখন আমরা সেই ক্যামেরাগুলি থেকে পাঠানো ফটোগুলি পরীক্ষা করে দেখছি, আমরা দেখতে পেয়েছি যে এই শিলাগুলি আলাদা স্তরের কাঠামো দিয়ে তৈরি। যা মঙ্গল পৃষ্ঠে পাওয়া সাধারণ আগ্নেয় শিলা বা বায়ু দ্বারা প্রবাহিত বালি জমার দ্বারা গঠিত স্তরের কাঠামোর থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে আলাদা।"




গবেষণাটি একটি প্রাচীন উপকূলরেখার প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে যা রোভারের চিত্রের উপর ভিত্তি করে মঙ্গল গ্রহে যে জোয়ার-ভাটার খেলা চলত তা বুঝতে পেরেছে। গবেষকরা অনুমান করেছেন যে যেহেতু মঙ্গল গ্রহে দুটি চাঁদ রয়েছে সেই কারণে হারিয়ে যাওয়া এই প্রাচীন মহাসাগরে জোয়ারও খেলত। এখানে জলের বিপরীত স্রোতও রয়েছে শিলায়। সেই ছবি থেকে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। 


 


আরও পড়ুন, পাহাড়ি এলাকাতেই গভীরতা ছিল অন্তত ৬৬ ফুট, খোঁজ মিলল ভিজে বালিয়াড়ির, মঙ্গলে একসময় ছিল নদী অববাহিকাও!