কলকাতা: টার্মিনেটর সিরিজের সিনেমা অনেকেই দেখেছেন। সিনেমায় কোনও চরিত্রকে মারতে ভবিষ্যৎ থেকে হাজির হয়েছিল রোবট। আবার সেই চরিত্রকে বাঁচাতেই লড়াই করেছিল অন্য রোবট। আরও একটি সিনেমা I, Robot. সেখানেও প্রযুক্তির ভুলে মানুষকে আক্রমণ শুরু করেছিল বিশেষ সিরিজের রোবট। এসবই হলিউড ফিল্মের পর্দায় দেখা। কিন্তু এমন ঘটনাই বাস্তবে ঘটল দক্ষিণ কোরিয়ায়। 


একটি কারখানায় কাজ করা রোবট (Robot) মেরে ফেলল কারখানার এক শ্রমিককে। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, কোনটা বক্স আর কে মানুষ- এই দুইয়ের মধ্যে ফারাক করতে পারেনি ওই রোবট। সেই ভুলেই ওই ব্যক্তিকে তুলে আছাড় মারে ওই রোবট। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় ওই শ্রমিকের। রোবোটিক সংস্থার ওই কর্মী রোবটের সেন্সর অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন। কর্মরত অবস্থায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। 


সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, পুলিশ জানিয়েছে ওই রোবট ব্যবহার করা হতো আনাজভর্তি বাক্স তোলার জন্য। ওই বাক্স তুলে প্যালেটে বসাতো রোবট। কোনওকারণে সেটি ঠিকমতো কাজ করেনি এবং ওই ব্যক্তিতে বাক্স ভেবে ভুল করেছে।


ওই যন্ত্রের রোবোটিক আর্ম (Robotic Arm) ওই ব্যক্তির দেহের উপরিভাগ কনভেয়ার বেল্টে চেপে ধরেছিল। তার ফলে ওই ব্যক্তির মুখ এবং বুক পিষ্ট হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। 


দক্ষিণ কোরিয়ায় (South Korea) এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। মার্চ মাসে ওই দেশেই এক গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় এক কর্মী রোবটের কারণে আটকে পড়ে গুরুতরভাবে জখম হয়েছিলেন।


এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল জার্মানিতেও। ২০১৫ সালে জার্মানিতে ফক্সওয়াগনের কারখানায় রোবটের কারণে মৃত্যু হয়েছিল এক শ্রমিকের। কারখানায় যে দল রোবটটিকে বসাচ্ছিল তাদের সদস্য ছিলেন তিনি। সেই রোবটই ওই ব্যক্তিকে একটি মেটাল প্লেটে আছড়ে মেরে দেয়। ওই ঘটনায় বলা হয়েছিল মানুষের ভুলেই এই ঘটনা ঘটে। যন্ত্রাংশ নিয়ে কাজ করার কথা ছিল ওই রোবটের। ওই রোবটের কারণেই মৃত্যু হয়েছিল ওই শ্রমিকের।   


সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে AI-নিয়ে নানা কথা। বিভিন্ন কাজে মানুষের পাশাপাশি AI-এর ব্যবহার করা হচ্ছে। যন্ত্র চালানো, তথ্য দেখভাল থেকে শুরু করে লেখা-আঁকা আরও কতকিছু, সবেতেই ব্যবহার হয় AI-এর। AI-এর প্রসঙ্গ উঠলেই চলে আসে রোবটের কথাও। রোবটের প্রসঙ্গ বহু পুরনো, যত দিন গিয়েছে ততই বেড়ে চলেছে রোবটের ব্যবহার। বিভিন্ন কারখানায় নানা কাজে, অস্ত্রোপচারে ব্যবহার হয় নানা ধরনের রোবট। সহজে-দ্রুত কাজ করার জন্য যে প্রযুক্তির উপর ভরসা দিন দিন বাড়ছে, সেই খানেই এমন দুর্ঘটনা আতঙ্ক বাড়াতেই পারে।


আরও পড়ুন: ভারতের আকাশেও মেরুজ্যোতি! লাদাখে রাতের আকাশে আলোর নৃত্য