নয়াদিল্লি: প্রশান্ত মহাসাগরের বিপুল জলরাশি ফুঁড়ে জন্ম নিল আস্ত একটি দ্বীপ। মহাসাগরের গর্ভে আশ্রিত আগ্নেয়গিরি থেকে লাগাতার লাভার উদগীরণ ঘটছিল। সেই অগ্ন্যুৎপাত থিতিয়ে আসতেই বিপুল জলরাশির মধ্যে একটুকরো দ্বীপের দেখা মিলল।  হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি চালাতে গিয়ে সেটির খোঁজ পেল জাপান। (Newborn Island)


গত ৩০ অক্টোবর জাপানের ইয়োজিমা দ্বীপ থেকে অদূরে, প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। ছাই, পাথর, লাভা উড়ে এসে জমা হতে থাকে মহাসাগরের বুকে। পরিস্থিতি কিছুটা থিতিয়ে আসতে জাপানের তরফে নজরদারি চালানো হয় ওই এলাকায়, তাতেই নয়া দ্বীপ জন্ম নিয়েছে বলে দেখা যায়। (Earth Science)


জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ টোকিও থেকে মেরেকেটে ১২০০ কিলোমিটার দূরে, ইজু-ওগাসাওয়ারা বৃত্ত এলাকায় অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। মিনিটে মিনিটে তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যেতে থাকে। লাল রংয়ের লাভা মিশ্রিত জলে ঢেকে যায় গোটা এলাকা।  বহু দূর পর্যন্ত ছিটকে পড়তে থাকে পাথরের চাঙড়। কোনও কোনওটি ১৬০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উপরে উঠে যায়। 


আরও পড়ুন: Air Pollution: পঞ্জাব থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ, বিষাক্ত ধোঁয়াশা বিস্তৃত বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত, দেখাল NASA


ইউনিভার্সিটি অফ টোকিওর গবেষকরা জানিয়েছেন, মোট দুই জায়গায় অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। ইয়োজিমার দক্ষিণ দিকে তীব্র বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে এক দিকে, অন্য দিকে, উত্তর দিকেও পাথরের স্তূপ জমা হতে থাকে। তার ফলেই প্রায় ৩৩০ ফুট চওড়া, বৃত্তাকার একটি দ্বীপ জন্ম নিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে। নবজাতক ওই দ্বীপকে ঘিরে জলের রং এই মুহূর্তে ফ্যাকাশে, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ঝামাপাথর। সচ্ছিদ্র ওই ঝামাপাথর অগ্ন্যুৎপাতে ফলেই গড়ে ওঠে বলে মত বিজ্ঞানীদের। ওই দ্বীপের নীচে, সমুদ্রগর্ভে কোনও গহ্বরও সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অর্থাৎ দ্বীপটি দীর্ঘকাল জলের উপর জেগে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। পরবর্তী কালে সেটি ইয়োজিমার সঙ্গে মিশে যেতে পারে বলেও মনে করছেন গবেষকদের একাংশ।


বিগত কয়েক বছরে জাপান উপকূলের অদূরে, প্রশান্ত মহাগরে এমন একাধিক অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা সামনে এসেছে। এর ফলে ধোঁয়া, লাভা মাটি ফুঁড়ে উপরে উঠে আসে। জলের সংস্পর্শে এসে লাভা, ম্যাগমা, পাথর এবং অন্যান্য সামগ্রী দ্রুত কঠিন আকার ধারণ করে। জাপান সংলগ্ন সমুদ্রগর্ভে এমন লাভা উদগীরণের ঘটনা নতুন নয়। বরং বছরভর এত অগ্ন্যুৎপাত ঘটে যে, প্রতিবছর ইয়োজিমার উচ্চতা ৩.৩ ফুট করে বাড়তে থাকে।


এর আগে, ২১ অক্টোবরও ওই এলাকায় অগ্ন্যুৎপাত এবং তার জেরে কম্পনের ঘটনা সামনে আসে। প্রতি দু'মিনিট অন্তর তা অব্যাহত ছিল।  তার পর ৩০ অক্টোবর ইয়োজিমা থেকে অনতি দূরে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। তার ফলেই ওই নয়া দ্বীপটি  জন্ম নিয়েছে। আপাতত সেটির নাম রাখা হয়েছে 'Setsuya Nakada', সেৎসুয়া নাকাদা। বাংলা তর্জমায় তাৎক্ষণিক গড়ে ওঠা ভুখণ্ড বোঝায়।