কলকাতা: মহাকাশে শব্দ নেই, প্রাণ নেই, আলো ছুটে চলেছে তার নিজস্ব গতিবেগে। নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ- কেউ কেউ এক একজনের থেকে রয়েছে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে। অন্ধকার মহাকালে সকলে সকলের মতো, এমনটা মনে হলেও তা সঠিক নয়। সেখানেও নিয়ম রয়েছে, শৃঙ্খলাও। দূরত্ব যাই-ই হোক না কেন, প্রত্যেকটি গ্রহ-উপগ্রহ একটি সমনিয়মে রয়েছে। যেমন সমস্ত গ্রহ একই দিকে প্রদক্ষিণ করে। ঘূর্ণন নিয়ম সকলেরই প্রায় এক। তফাৎ যা রয়েছে তা গতিবেগে।
আর যে টানে এমন নিয়মের জালে আবদ্ধ, তা কখনও চৌম্বকীয়, কখনও মাধ্যাকর্ষণ। যদিও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই নিয়ম মানছে না বেশ কয়েকটি 'এক্সোপ্ল্যানেট'। তারা এই টান উপেক্ষা করেই কক্ষপথের বাইরে চলে যেতে চাইছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি গ্রহ-নক্ষত্রর একটি গঠন সিস্টেম রয়েছে। নক্ষত্রর ক্ষেত্রে যেমন প্রোটোস্টেলার মেঘ দেখা যায় আবরণীর মধ্যে। যেখানে কিছু inherent rotational momentum দেখা যায়। গ্রহদের ক্ষেত্রে এই মেঘ আবার তৈরি হয় তার কক্ষপথের বাইরে। এর ফলে গ্রহের নিজস্ব কক্ষপথে একরকম গতি থাকে, বাইরে আরেকটি গতি।
তবে মহাকাশ বিজ্ঞান জানায়, এই ধরনের ঘটনা সাধারণত বাইনারি কিংবা মাল্টিপল স্টার সিস্টেমে থাকে। সিঙ্গল স্টার প্ল্যানেটরি সিস্টেমে এটি দেখা যায় না। কিন্তু ব্যতিক্রম তো সব ক্ষেত্রেই থাকে। অনন্ত বিশ্বই বা বাদ যাবে কেন? বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, WASP-131 নামক প্ল্যানেটরি সিস্টেমে এই বেনজির কার্যকলাপটি ঘটছে। অর্থাৎ মাধ্যাকর্ষণের নিয়মের মধ্যে থাকতে চাইছে না গ্রহটি।
কী এই WASP-131?
মহাকাশে এটি একটি প্ল্যানেটরি সিস্টেম। তবে নামেই সিস্টেম। এর মধ্যে গ্রহ আছে একটিই। তার নাম- 131b। এর চরিত্র অনেকটা সৌরমণ্ডলের গ্রহ শনির মতো। উত্তপ্ত গ্যাসে পূর্ণ এই এক্সোপ্ল্যানেটটি। এর বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। যদিও ওজনের নিরিখে বৃহস্পতির ওজনের চার ভাগের একভাগ। যদিও আয়তনে সৌরমণ্ডলের সর্ববৃহৎ গ্রহ বৃহস্পতির থেকে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। এটিকে- super-puff গ্রহ নামেও ডাকা হয়।
আরও পড়ুন, বিশেষ কাজের আগে দই খেয়ে বেরোন? শুভর বদলে অশুভ প্রভাব শরীরে?
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহটি ট্রানজিট পদ্ধতির মাধ্যমে আবিষ্কার করা হয়েছিল। WASP-131-এর ঘূর্ণন বিশ্লেষণ যখন করা হয়েছিল, দেখা যায় গ্রহের মতো আচরণ করছে না এটি। তখনই এই 'নিয়ম ভাঙার' প্রশ্ন ওঠে বৈজ্ঞানিক মহলে।