নয়াদিল্লি: শুধুমাত্র বয়স্করাই নন, যখন তখন হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অল্পবয়সিরাও। দিব্যি সুস্থ মানুষ, কোনও উপসর্গই নেই, মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে সব। হৃদরোগে এই বৃদ্ধির নেপথ্যে একাধিক কার্যকারণ চিহ্নিত করা হলেও, কিছু বোঝার আগেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৮০ শতাংশ ঘটনাই রোখা সম্ভব। সেই সমস্যার সমাধানে এবার যুগান্তকারী আবিষ্কার করে ফেললেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা। ‘হার্ট ক্য়ালকুলেটর’ আবিষ্কার করে ফেলেছেন তাঁরা, যার মাধ্যমে সময়ের ঢের আগেই ঝুঁকি রয়েছে কি না, বোঝা যাবে। (Heart Calculator)
Prevent Risk Percentiles Tool নামের ‘হার্ট ক্যালকুলেটর’ নিয়ে হাজির হয়েছেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা।https://nwkhanlab.shinyapps.io/percentiles/ নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। রক্তচাপস বয়স, লিঙ্গ, ডায়বিটিস, ধূমপানের অভ্যাস আছে কি না এবং BMI-এর মতো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাধারণ কিছু প্রশ্ন রয়েছে। কোলেস্টেরলের মাত্রাও দেওয়ার উপায় রয়েছে। সেই মতো গ্রাহকের স্কোর নির্ধারণ করে ঝুঁকির কথা জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই ‘হার্ট ক্যালকুলেটর’ তৈরিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির কার্ডিওভাস্কুলার এপিডেমিওলজি বিশেষজ্ঞ সাদিয়া খান। তাঁর বক্তব্য, “হৃদরোগের দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি বুঝতে এই প্রথম এমন উপায় বের করা হয়েছে।”
৩০ থেকে ৫৯ বছর বয়সি প্রাপ্তবয়স্করা এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি যাচাই করতে পারবেন। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ঝুঁকি কতটা দেখতে পাবেন। ৯০ শতাংশ ঝুঁকি দেখালে আগেভাগেই সেই ব্যক্তি চিকিৎসা করানোর সুযোগ পাবেন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আগে ভাগে ঝুঁকির কথা জানা গেলে, তা প্রতিহত করার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বলে মত তাঁদের। মানুষের বোঝার সুবিধার জন্যই শতাংশের হিসেব রাখা হয়েছে।
৩০ থেকে ৫৯ বছর বয়সি প্রায় ৮০০০ প্রাপ্তবয়স্কের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের সাহায্য়ে এই প্রযুক্তির আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিস ইভেন্ট প্রিভেনশন ইকোয়েশনও ব্য়বহার করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য হাতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তাতে দেখা গিয়েছে, মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
হৃদরোগের কিছু প্রাথমিক উপসর্গের উপরও জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা, যেমন, অস্বাভাবিক রকমের ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, অস্বাভাবিক রকম ভাবে পা, গোড়ালি অথবা তলপেট ফুলে যাওয়া, চোয়াল, ঘাড়, পিঠ ও পেটে অস্বস্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা, বমি, অস্বাভাবিক রকমের ঘাম, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নালের তথ্য বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ গোটা পৃথিবীতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে 3 কোটি ৫৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।