নয়াদিল্লি: রাকেশ শর্মার পর শুভাংশু শুক্ল। মহাকাশে পৌঁছলেন দ্বিতীয় ভারতীয় মহাকাশচারী। ৪১ বছর পর ফের মহাকাশে পা রাখলেন ভারতের এক মহাকাশচারী। বেসরকারি অভিযান হলেও, এই Axiom Mission 4 অভিযান ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আগামী দিনে নিজের ক্ষমতায় মহাকাশে মানুষ পাঠাতে চায় ভারত। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতেই শুভাংশুকে Axiom 4 অভিযানে শামিল করা হয়। (Shubhanshu Shukla)
বৃহস্পতিবার আমেরিকায় NASA-র কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেন শুভাংশু ও তাঁর তিন সহযাত্রী। ইলন মাস্কের সংস্থা SpaceX-এর রকেট ও তাদের মহাকাশযানই শুভাংশুদের মহাকাশে নিয়ে গিয়েছে। আজ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে যাবেন তাঁরা। ২৮ ঘণ্টা পর কাল পা রাখবেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। (ISRO News)
এই অভিযানের দিকে নজর রয়েছে গোটা বিশ্বের। তবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO বিশেষ নজর রাখছে। ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশুকে মহাকাশ অভিযানের জন্য বেছে নেয় ISRO-ই। ২০১৯ সালে সেই মর্মে ফোন যায় তাঁর কাছে। এর পর শুরু হয় প্রশিক্ষণ। ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘গগনযান’ অভিযানের জন্য নির্বাচিত মহাকাশচারীদের দেশবাসীর সামনে নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুভাংশুর পরিচয় সামনে আসে তখনই।
SpaceX-র মহাকাশযানে চাপিয়ে শুভাংশুকে মহাকাশে পাঠাতে মোট ৫৫০ কোটি টাকা খরচ করছে ISRO. ১৪ দিনের মহাকাশ সফরে গিয়েছেন শুভাংশু। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে যে ৬০টি পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হবে, তাতে তিনিও অংশ নেবেন। খাদ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত গবেষণা চালাবেন শুভাংশু, যাতে ‘গগনযান’ অভিযান তো বটেই, ভবিষ্যতেও মহাকাশে খাদ্যের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠা যায়।
ভারতীয় মহাকাশচারীদের কথা মাথায় রেখে মহাকাশে মেথি এবং মুগ ডাল চাষের পরীক্ষা চালাবেন শুভাংশু। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাইরে মহাকাশে শস্যচাষ আদৌ সম্ভব কি না, তা দেখাই এই পরীক্ষার লক্ষ্য। আগামী দিনে মহাকাশের গবেষণাগারে কাজের ইচ্ছেও রয়েছে শুভাংশুর। ২০২৭ সালে ‘গগনযান’ অভিযানের লক্ষ্য রয়েছে ভারতের। সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া) আমেরিকা এবং চিনের পর স্বাধীন ভাবে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে ভারতের। আর তার জন্যই Axiom 4-এ ৫৫০ কোটি টাকা খরচ করছে ISRO.
'গগনযান' অভিযানের পাশাপাশি, মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন গড়াও লক্ষ্য ISRO-র। ২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন 'ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন' গড়তে চায় তারা। তবে 'গগনযান' অভিযানও বার বার পিছিয়েছে। চলতি বছরের শেষে পরীক্ষামূলক উড়ানের কথা রয়েছে। তার পর মানুষ পাঠানোর পালা আসবে। চার মহাকাশচারীকে সেই মতো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ISRO.