নয়াদিল্লি: কোনও রকম হইচই ছাড়া নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আর তাতেই একের পর এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করে চলেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র মঙ্গলযান Curiosity. এবার লালগ্রহের মাটিতে ‘মাকড়শার জালে’র ছবি তুলে সাড়া ফেলে দিল। আসলে কী সেই বস্তু, বিশদে ব্য়াখ্যা করল NASA. (Spiderwebs on Mars)
একেবারে কাছ থেকে মঙ্গলের মাটির কিছু ছবি তুলেছে Curiosity রোভার। আর সেই ছবিই সাড়া ফেলে দিয়েছে। যে ছবি হাতে এসেছে, তাতে মঙ্গলের মাটির বেশ কিছু জায়গায় আঁকিবুকি কাটা, জালের মতো বস্তু চোখে পড়েছে। একনজরে দেখলে সেগুলি মাকড়শার জাল বলেই ঠাহর হয়। ২৩ জুন ওই ছবি প্রকাশ করেছে NASA. (Mars News)
NASA জানিয়েছে, Gale Crater নামক গহ্বরে অবস্থিত, ৫.৫ কিলোমিটার উচ্চতার Mount Sharp পাহাড়ের ঢালে এই মুহূর্তে রয়েছে Curiosity. সেখানে ওই আঁকিবুকিগুলিই পরখ করে দেখছে। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে, চলতি বছরের গোড়ায় ওই এলাকায় পৌঁছয় Curiosity রোভার। মঙ্গলের বুকে আগেও মাকড়শার জালের মতো কিছু দেখা গিয়েছিল। তবে এবারে যে জালের মতো অংশ দেখা গিয়েছে, তা চরিত্রগত ভাবে আলাদা। ফলে সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চান বিজ্ঞাীরা।
তবে দেখতে মাকড়শার জালের মতো হলেও, Curiosity যে অংশের ছবি তুলেছে, সেগুলিকে Boxwork বলছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, যে আঁকিবুকি চোখে পড়ছে, সেগুলি আসলে খনিজ সমৃদ্ধ শৈলশিরা ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তার হতে পারে। এককালে ওই অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জল ছিল। পাথরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফাটলে জমা হয় খনিজ। দীর্ঘ সময় ধরে জমতে জমতে সিমেন্টের মতো শক্ত হয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে শিলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, কিন্তু খনিজ নষ্ট হয়নি। ফলে শৈলশিরার নেটওয়র্ক রয়ে গিয়েছে। ওই অঞ্চল থেকে ক্যালসিয়াম সালফেটও পাওয়া গিয়েছে। সেই নমুনা সংগ্রহ করেছে Curiosity রোভার।
এর আগে যে মাকড়শার জালের মতো অংশ চোখে পড়েছিল মঙ্গলের মাটিতে, সেগুলি ছিল কার্বন ডাই অক্সাইড বরফ। পৃথিবীর বুকে অনুরূপ জালও গড়তে সফল হন বিজ্ঞানীরা। তবে এবার যে অংশ সামনে এসেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, মঙ্গলের বুকে জলের অস্তিত্ব সম্পর্কে বিশদে জানা সম্ভব হবে এবার। মাটির নীচে যে সাগর চাপা পড়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারেও যথেষ্ট তথ্য় পাওয়া সম্ভব হবে। মঙ্গলের বুকে কখনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না, তাও জানা সম্ভব বলে আশা বিজ্ঞানীদের।