কলকাতা: মহাকাশে গ্রহাণু, ধুমকেতু বা উল্কার যাতায়াত বিরল কিছু নয়। কিন্তু কোনও গ্রহাণুর আকার যদি স্টেডিয়ামের মতো হয়, তা হলে? আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিক দেখেছেন। প্রায় স্টেডিয়ামের মতো বড় একটি গ্রহাণু এবার ধরা পড়ল জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের 'চোখে।' পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেটিকে কাছ থেকে দেখেছেন তাঁরা। 


বিশদ...
গত ২ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে যায় '2008 OS7' নামের ওই গ্রহাণু। খুব কাছে মানে ঠিক কতটা? সংখ্যাটা অবশ্য় চমকে দেওয়ার মতো। অঙ্কের হিসেবে, পৃথিবী থেকে ২৯ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বে ছিল সে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে চাঁদ যতদূর, তার থেকেও সাড়ে সাত গুণ বেশি দূরত্ব। মহাকাশের বিস্তার কল্পনা করলে অবশ্য এই দূরত্ব তেমন কিছুই মনে হবে না। এর সম্পর্কে বিশদ জানার জন্য নাসার 'Deep Space Network' প্ল্যানেটরি রেডার গ্রহাণুটির উপর নজর রাখে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, গ্রহাণুটির দ্বারা পৃথিবীর কোনও ক্ষতির আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু যে ভাবে সে পৃথিবীর 'পাশ' ঘেঁষে গিয়েছে, তাতে একটি রেডিও অ্যান্টেনা ব্যবহার করে তার আকার, ঘূর্ণন, আকৃতি এবং পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিশদ তথ্য জোগাড় করতে পেরেছেন তাঁরা। 


কী জানা গেল?
নাসা একটি আপডেট দিয়ে জানায়, 'পৃথিবীর কাছাকাছি আসার আগে পর্যন্ত 2008 OS7 এতটা দূরে ছিল যে প্ল্যানেটরি সিস্টেমের পক্ষে এর ছবি তোলা সম্ভব হয়নি।' গ্রহাণুটি সম্পর্কে জানা গিয়েছিল অবশ্য ১৬ বছর আগে। নির্দিষ্ট করে বললে ২০০৮ সালের ৩০ জুলাই। ইউনিভার্সিটি অফ আরিজোনার একদল গবেষক অনন্ত মহাশূন্যে খোঁজাখুঁজি করছিলেন। সে সময়েই এই গ্রহাণুর কথা জানা যায়। তবে সে সময়ে পর্যবেক্ষণে যা উঠে এসেছিল তাতে বোঝা যায়, এই মহাজাগতিক প্রস্তরখণ্ড চওড়ায় ২০০ থেকে ৫০০ মিটারের মধ্য়ে। প্রতি সাড়ে ২৯ ঘণ্টায় ১ বার পাক খায় সে। এই তথ্য জানার জন্য় বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর লাইট কার্ভ বা কী ভাবে সময়ের সঙ্গে তার ঔজ্জ্বল্য বদলাতে থাকছে, সেইটা বিশ্লেষণ করেছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি,  Deep Space Network-এ যে Goldstone Solar System Radar রয়েছে, সেটি দিয়ে গ্রহাণুটির ছবি তোলেন জ্য়োতির্বিজ্ঞানীরা। দেখা যায়, তার পৃষ্ঠভাগে কিছু গোলাকৃতি ও কিছু কোণাচে এলাকা রয়েছে। আরও একটি জিনিস স্পষ্ট হয়ে যায়। চওড়ায় গ্রহাণুটি ১০০-২০০ মিটারের মধ্যে। তবে তার ঘূর্ণনের গতি বেশ কম। ২ বছর ৬ মাসে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে সে। 


 


আরও পড়ুন:ইতিহাস গড়েও হল না প্রত্যাশাপূরণ, চাঁদের মাটিতে দেহ রাখতে চলেছে আমেরিকার চন্দ্রযান