নয়াদিল্লি: একে পৃথিবী থেকে বহু দূরে, তার উপর হাওয়ায় ভেসে থাকা। মহাকাশে দিনযাপন মোটেই সহজ নয়। অথচ সেই ভাবেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস মহাকাশে কাটান নভোশ্চরেরা। মেপে মেপে প্রতিটি পদক্ষেপ করতে হয়। এমনকি গলা শুকিয়ে গেলে জলপান করতেও ধকল বিস্তর। কিন্তু মহাকাশে কী ভাবে জলপান করেন নভোশ্চররা? হাতেকলমে দেখালেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস। (Sunita Williams)


আট দিনের অভিযানে মহাকাশে গিয়ে, ছ'মাসের বেশি সময় ধরে সেখানে আটকে রয়েছেন সুনীতা এবং তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোর। সেই পরিস্থিতিতেও নিয়মিত পৃথিবীবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটসের নিডহ্যামে, নিজের এলাকার স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন সুনীতা। সেখানেই মহাকাশে জলপান কী ভাবে করেন, জানতে চান এক পড়ুয়া। (Science News)


সঙ্গে সঙ্গে হাতেকলমে ওই শিশুকে গোটা প্রক্রিয়া তুলে ধরেন সুনীতা। মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। সেক্ষেত্রে পানীয় গলায় ঢালা মুখের কথা নয়। কারণ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে মহাকাশে জল  তাই বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, বোতল নয়, বিশেষ থলেতে ভরে রাখা হয় জল। ফলে নীচের দিকে প্রবাহিত হয় না জল, এদিক ওদিক ভেসে যায়। তাই মহাকাশে জল মজুতের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।



সুনীতা জানিয়েছেন, মহাকাশে জলের বোতলের পরিবর্তে যে থলে ব্যবহার করা হয়, তাতে একমুখী ভালভ রয়েছে। ভিতরে একেবারে আটকানো থাকে স্ট্র। থলের নীচের অংশে চাপ দিলে, স্ট্র দিয়ে বেরিয়ে আসে জল। কিন্তু সেই জল পৃথিবীর মতো তরল নয়, বরং থকথকে, আঠাল। খানিকটা জেলির মতো। 


ভিডিওয় দেখা যায়, সুনীতা থলেতে চাপ দিতেই স্ট্র দিয়ে বলের মতো থকথকে আকারে বেরিয়ে আসে জল। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের ভিতর হাওয়ায় ভেসে থাকে সেটি।  সুনীতা জলের থলে সরিয়ে রেখে, ওই থকথকে বলটির দিকে ভেসে যান। হাঁ করে ঢুকিয়ে নেন মুখে। মহাকাশে জলপান করার এত ঝক্কি তা জানা ছিল না শিশুদের। তাই সুনীতার মুখে হাসি থাকলেও, অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায় সকলকে।