নয়াদিল্লি: গোটা ব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবীবাসী একাকী, নাকি অন্যত্রও রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব! এই প্রশ্ন আজকের নয়, বিগত কয়েক দশকের। মহাশূন্যের আদি-অন্ত কোথায়, আদৌ তার হদিশ মিলবে কিনা, এই প্রশ্নের সদুত্তর নেই বিজ্ঞানীদের কাছেও। কোটি কোটি নক্ষত্র রয়েছে মহাশূন্যের আলো-আঁধারি জগতে। ছায়াপথের সংখ্যা তার চেয়েও বেশি বলে মত বিজ্ঞানীদের। (Science News)


কিন্তু মহাশূন্যে গ্রহের সংখ্যা ঠিক ক’টি?  এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া মোটেই সহজ নয়। কারণ আমাদের সৌরজগতে আটটি গ্রহের সন্ধান মিললেও, তার বাইরেও অজস্র গ্রহ রয়েছে, যারা অন্য নক্ষত্রদের প্রদক্ষিণ করে চলেছে লাগাতার। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাশূন্যে এখনও পর্যন্ত ৫ হাজার ৫১০টি গ্রহের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে আটটি আমাদের সৌরমণ্ডলের অন্তর্গত এবং বাকি সবক’টিও আমাদেরই আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অংশ। তবে এর বাইরেও আরও অজস্র গ্রহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলে মত বিজ্ঞানীদের। (Space News)


নিউ ইয়র্কের আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচরাল হিস্ট্রি-র জ্যোতির্বিজ্ঞানী মার্ক পপিনচক জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৫ হাজারের কাছাকাছি গ্রহের সন্ধান মিললেও, নক্ষত্র পিছু যদি একটি গ্রহও ধরা হয়, সেক্ষেত্রেও আমাদের ছায়াপথেই ১০ হাজার কোটি নক্ষত্র রয়েছে। সেক্ষেত্রে গ্রহের সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে জানা নেই।


আরও পড়ুন: Aditya-L1 Mission: আলোয় উদ্ভাসিত বসুন্ধরা, পাশে চলমান বিন্দু, সেলফি-সহ উপহার পাঠাল সৌরযান আদিত্য L1


বিষয়টি অত্যন্ত জটিল বলে মত মার্কের। তাঁর মতে, ইন্টারনেট পরিষেবা ছাড়া নিজের শহরে মানুষের সংখ্যা ঠিক কত, তা আঁচ করতে চাওয়ার মতোই, মহাকাশে গ্রহের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করাও এককথায় অসম্ভব। নক্ষত্র পিছু অন্তত একটি করে গ্রহ রয়েছে বলে মত বিজ্ঞানীদের। মোট গ্রহের সংখ্যা বের করতে তাঁরাও কম চেষ্টা করেননি এখনও পর্যন্ত। ট্রানজিট পদ্ধতি অনুসরণ করা থেকে ব়্যাডিয়াল ভেলোসিটি পদ্ধতিও অনুসরণ করেন বিজ্ঞানীরা।


তাতেই ১৯৯৫ সালে 51 Pegasi b বা ডিমিডিয়াম এক্সোপ্ল্যানেটটির সন্ধান মেলে, যা আমাদের সৌরজগতের বাইরে রয়েছে। সূর্যেরই মতো একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সেটি। ২০১৯ সালে ওই গ্রহের দুই আবিষ্কারক, মিচেল মেয়র এবং ডিডিয়ের কোয়েলজ নোবেল পুরস্কারও জেতেন


ট্রানজিট এবং ব়্যাডিয়াল ভেলোসিটি পদ্ধতি, দু’টির ক্ষেত্রেই গ্রহের পরিবর্তে কোনও একটি নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণ করেন বিজ্ঞানীরা। তার আশেপাশে কোনও গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা, চলে অনুসন্ধান। এখনও পর্যন্ত যত গ্রহের সন্ধান মিলেছে, সেগুলির সবক’টিই আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অন্তর্গত। তার বাইরে কী রয়েছে, এখনও তা জানা যায়নি। কারণ অত দূরত্বে পর্যবেক্ষণ চালানোর মতো শক্তিশালী টেলিস্কোপ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।


তবে আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরেও গ্রহ রয়েছে বলে মত বিজ্ঞানীদের। মাইক্রোলেন্সিং পদ্ধতিতে ইতিমধ্যেই তার সপক্ষে ইঙ্গিত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলার আগে, আরও কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে বলে মত তাঁদের। ছায়াপথের বাইরের জগতও স্পষ্ট দেখা যায়, এমন টেলিস্কোপ হাতে এলেই তা সম্ভব।