নয়াদিল্লি: পৃথিবীতে প্রাণসৃষ্টির অন্যতম কারণ বায়ুমণ্ডল। সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত একটি গ্রহেও এবার বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্ব রয়েছে বলে মিলল প্রমাণ। পৃথিবী থেকে ৪১ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, সৌরজতের বাইরের ওই গ্রহ বা Exoplanet-টিকে Trappist-1e বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে Trappist-1e. ওই নক্ষত্র থেকে তার যে দূরত্ব, তা-ও প্রাণধারণের উপযোগী। Trappist-1e-এর মাটি পাথুরে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে তরল অবস্থায় জলও থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা, যা কি না বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি। (TRAPPIST-1e Exoplanet)
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্য়ে গবেষণা চালিয়ে Trappist-1e এবং তার পরিবেশ সম্পর্কে নয়া তথ্য সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। Astrophysical Journal Letters-এ নতুন গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রাণধারণের উপযোগী বলে সেই গ্রহগুলিকেই ধরা হয়, নক্ষত্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থিত যেগুলি। Trappist-1e তার নক্ষত্র থেকে যে দূরত্বে অবস্থিত, তাতে তার তাপমাত্রা খুব বেশিও নয়, আবার খুব কমও নয়। আয়তনও পৃথিবীর মতোই। ফলে সৌরজগতের বাইরের গ্রহটিকে ঘিরে প্রত্যাশা বাড়ছে। (Science News)
সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত কোনও Exoplanet-এ জল পাওয়া গেলেও, সেখানে প্রাণসৃষ্টির জন্য বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতি অত্যন্ত জরু। সেই বায়ুমণ্ডলকে ‘গ্রিনহাউস এফেক্ট’ সম্পন্নও হতে হবে, অর্থাৎ গ্রিনহাউস গ্যাসের বলয়ে ঢাকা থাকে পৃথিবী এবং নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় থাকে। পাশাপাশি, জল মহাকাশে উবেও না যায়। Trappist-1e একটি লাল রংয়ের বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে, যার নাম Trappist-1. ওই নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলা আরও ছয়টি Exoplanet-এর সন্ধান মিলেছে। সেগুলিও পাথুরে গ্রহ বলে জানা গিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অন্য যে সব বামন নক্ষত্রের খোঁজ মিলেছে, সেগুলির তাপমাত্রা সূর্যের চেয়ে অনেক কম। সূর্যের তাপমাত্রা যেখানে ৫৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেখানে ওই নক্ষত্রগুলির তাপমাত্রা ২৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত Exoplanet গুলির অধিকাংশই এমন লাল বামন গ্রহকে প্রদক্ষিণ করে। সূর্যের সমান ক্ষমতাসম্পন্ন নক্ষত্রগুলিকে ঘিরে গ্রহ নেই এমন নয়, বরং এই ধরনের কম শক্তিশালী নক্ষত্রগুলিকে সৌরজগতের কাছাকাছি অবস্থানে খুঁজে পেতে সুবিধা হয়। নক্ষত্রকে একবার প্রদক্ষিণ করতে কম সময়ও নেয় তারা। ফলে তাদের উপর নজরদারি চালানো সহজ।
আমাদের ছায়াপথেও এমন পাথুরে গ্রহ রয়েছে বেশ কিছু। ২০১০ সালে Kepler এবং Tess টেলিস্কোপ তেমন পাথুরে গ্রহের সন্ধান পায়।