নয়াদিল্লি: পৃথিবীর থেকে তো বড়, কিন্তু ঠিক কতটা বড় সূর্য? বোধহয় জন্মের আদিকাল থেকে এই প্রশ্ন ভাবিয়েছে মানুষকে। উত্তরও মিলেছে, তবে সেই উত্তর নিখুঁত কি? প্রশ্ন তুলল হালের এক গবেষণা। তাতে ধরা পড়েছে, আমাদের সৌর-পরিবারের (Sun In Solar System) নক্ষত্র, সূর্যকে যতটা বড় ভাবা হয়েছিল, সে সম্ভবত ততটাও বড় নয়। 'সায়েন্স অ্যালার্ট' নামে একটি বিজ্ঞান সংক্রান্ত ম্যাগাজিনে এই গবেষণা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দু'জন জ্যোতির্বিজ্ঞানীর সেখানে দাবি, এতদিন সূর্যের ব্যাসার্ধ (Radius In Sun Smaller) যা ভাবা হত, আদতে তা কিছুটা কম।
কী জানা গেল?
গবেষণাপত্রটিতে দাবি করা হয়েছে, সূর্যের ব্যাসার্ধ এত দিন যা ভাবা হত তার থেকে কিছুটা কম। ২ জ্যোতির্বিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা, অপটিক্যাল মেজারমেন্ট বা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সূর্যের যে ব্যাসার্ধ পরিমাপ করা হয়েছিল সেটি তার ফটোস্ফেরিক রেডিয়াস। দুটি পরিমাপ আলাদা কেন? বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, ফটোস্ফিয়ার নিচে সূর্যের ঘনত্বের তারতম্য রয়েছে। এই তারতম্যই এই ধরনের এফ মোড ফ্রিকোয়েন্সির গঠন নির্ধারণ করে। দুই বিজ্ঞানীরই বক্তব্য, সূর্যের ব্যাসার্ধ পরিমাপ করার ক্ষেত্রে আদর্শ হল 'পি-ওয়েভ'।
আর যা...
সূর্যের একেবারে ভিতরে যে গনগনে 'প্লাজমা' ইন্টিরিয়র রয়েছে, সেখানে তৈরি হওয়া ও সেখানেই আটকে থাকা শব্দতরঙ্গের ভিত্তিতে এই দাবি করেন ওই ২ জ্যোতির্বিজ্ঞানী। যে গবেষণাপত্রে এই দিকটি বিশ্লেষণ করা হয়, তা 'arXIV' -এ প্রকাশিত হয়েছে। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসাও টাকাটা এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডগলাস গাফ, এই ধরনের শব্দতরঙ্গ কতটা 'অসিলেট' করছে, তা বাকি শব্দতরঙ্গের তুলনায় সূর্যের একেবারে অন্দরের গনগনে অংশের ছবিটা বেশি ভালো করে তুলে ধরে। বিষয়টি সহজ করে বোঝাতে মন্দির বা গির্জার ঘণ্টার উপমা দিয়েছেন ওই দুই বিজ্ঞানী। তাঁদের মতে, ধরা যাক এই ধরনের ঘণ্টায় বালুকণা আঘাত হানল। এর ফলে পি-ওয়েভ, জি মোড, এবং এফ-মোডের লক্ষ লক্ষ শব্দতরঙ্গ তৈরি হবে। এর মধ্যে সাধারণভাবে এফ-মোড ব্যবহার করেই সূর্যের 'সিসমিক রেডিয়াস' পরিমাপ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, এই ধরনেই পরিমাপক সঠিক নয়। কারণ এগুলি সূর্যের ফটোস্ফিয়ার পর্যন্ত ব্যাপ্ত নয়। পরিবর্তে, পি-মোড অনেক বেশি ভরসার যোগ্য কারণ এগুলি আরও দূর পর্যন্ত যায়। শুধু তাই নয়। এগুলির উপর সূর্যের বাইরের স্তরের চৌম্বকক্ষেত্রের প্রভাব ও ঝড়ঝঞ্ঝাও কম। তাই ভরসা পি-মোড।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর উপর সবুজ আলোর চাদর! ISS ক্যামেরায় এ কেমন ছবি?