নয়াদিল্লি: মহাকাশে আবর্জনার স্তূপ জমা হওয়া নিয়ে উদ্বেগ আজকের নয়। মহাকাশে সাফাই অভিযান চালানোর পরিকল্পনাও চলছে। সেই আবহেই মহাকাশে আবর্জনা জমা করার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে জরিমানা করল আমেরিকা সরকার। কক্ষপথে আবর্জনা ফেলে আসার জন্য একটি স্যাটেলাইন সংস্থাকে মোটা টাকা জরিমানা করা হয়েছে। (Space Debris)
মহাকাশে আবর্জনা ফেলে আসার জন্য এই প্রথম কাউকে জরিমানা করা হল। আমেরিকার ফেডারেল কমিউনিকেশন্স কমিশন (FCC) জরিমানা করেছে স্যাটেলাইট টেলিভিশন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা DISH-কে। তারা নিজেদের কৃত্রিম উপগ্রহ EchoStar-7-কে নিরাপদে কক্ষপথ থেকে সরায়নি এবং আবর্জনা ফেলে এসেছে বলে অভিযোগ। তাই তাদের ১ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। (Science News)
২০০২ সালে EchoStar-7 স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ করপে DISH. ২০২২ সালের মে মাসে সেটিকে নামিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু জ্বালানি শেষ হয়ে যায় তার। ফলে আর কোনও উপায় না দেখে, কক্ষপথ থেকে ১৭৮ কিলোমিটার দূরের একটি জায়গায় ফেলে আসা হয়। ওই জায়গাটিকে পৃথিবীর উপরিস্থলে একটি জায়গায় স্থির থাকতে পারে কৃত্রিম উপগ্রহরা। তার জন্যই ওই সংস্থাকে জরিমানা করা হল।
FCC জানিয়েছে, পৃথিবীর কক্ষপথে দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড রোখাই তাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যপূরণেই বেসরকারি ওই সংস্থাকে জরিমানা করা হয়েছে। সংস্থার ব্যুরো চিফ লোয়ান ও এগাল জানিয়েছেন, মহাকাশ নির্ভর অর্থনীতি দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে. তাই সেখানে বিধিনিয়ম কার্যকর হওয়া জরুরি। নিয়ম-কানুন মেনে চলার দায়িত্ব সকলের। মহাকাশকে আবর্জনামুক্ত রাখতে আগামী দিনে আরও কড়া পদক্ষেপ করবে FCC.
এর আগে একটি রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর কক্ষপথে যে সমস্ত ধ্বংসাবশেষ ভেসে বেড়াচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে বিকল হয়ে যাওয়া মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ, মহাকাশচারীদের ব্যবহৃত এবং ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র, টুকরো টুকরো বস্তু। ঘণ্টায় ১৫ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে ছুটে চলেছে সেগুলি। শুধুমাত্র চাঁদের বুকেই সবমিলিয়ে ২০০ টন আবর্জনা জমা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, পৃথিবীর কক্ষপথ বরাবরা কৃত্রিম উপগ্রহের সংখ্যাও দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা SpaceX-এর একাই আগামী ১০ বছরে প্রায় ৪০০০০ স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নিয়েছে। OneWeb সংস্থা ৪০০০ স্যাটেলাইট পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে আগামী দশ বছরে। অ্যামাজনের কুইপার প্রজেক্টের আওতায় ৩২০০ মহাকাশযান পাঠাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিনও সেই দৌড়ে রয়েছে।