মুম্বইঃ সালটা ১৯৯৮। শারজার মাঠ। ২২ গজের অনেক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী এই মাঠ। এই মাঠেই খেলা ছিল ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার। কোকাকোলা কাপের ম্যাচ। দিন রাতের এই ম্যাচে প্রথমে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন অজি অধিনায়ক স্টিভ ওয়। ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন মার্ক ওয় ও অ্যাডাম গিল্ক্রিস্ট। বিধ্বংসী গিলক্রিস্ট সেদিন রান পাননি। কিন্তু মার্ক ওয় ৮১ রানের ইনিংস খেলেন। মিডল অর্ডারে রিকি পন্টিং ও ড্যামিয়েন মার্টিন রান না পেলেও শতরান হাঁকান মাইকেল বিভান। মূলত মার্ক ও বিভানের ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করেই স্কোরবোর্ডে বড় রান গড়ার পথে এগোতে থাকে অস্ট্রেলিয়া শিবির। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৮৫ রান বোর্ডে তুলতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া।
বিশাল রানের লক্ষ্যমাত্রা। তার ওপর আবার ইনিংসের বিরতিতে ঝড় ওঠে শারজায়। যার জন্য ওভার ও লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমে ভারতের জন্য। পরিবর্তিত লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪৬ ওভারে ২৭৭। সেই সময়কার দিনে বিশ্বের যে কোনও পিচে আড়াইশোর বেশি রান তাড়া করা বেশ কষ্টসাধ্য বিষয় মানা হত। কিন্তু ভারতীয় দল হাল ছেড়ে দেয়নি। সচিন ১৪৩ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দেন শারজার দর্শকদের। সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার তারকাখচিত বোলিং লাইন আপে ছিলেন শেন ওয়ার্ন, ড্যামিয়েন ফ্লেমিং, মাইকেল কাসপ্রোয়িচের মতো তারকারা। কিন্তু তাঁদের বোলিংকেও সেদিন ক্লাবস্তরে নামিয়ে এনেছিলেন সচিন। একের পর এক দর্শনীয় শট। বেশ কয়েকবার গ্যালারিতে ফেললেন বল। ম্যাচের ৪৩ তম ওভারে যখন আউট হলেন সচিন, তখন তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৩১ বলে ১৪৩ রান। নিজের ইনিংসে ৯টি বাউন্ডারি ও ৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সচিন।
ফ্লেমিংয়ের বলে সচিন যখন আউট হলেন, তখন ভারতের দরকার আর ১৮ বলে ৩৫ রান। যদিও শেষ পর্যন্ত আর কেউই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। ম্যাচে ২৬ রানে হেরে যায় ভারত। তবে রান রেটে নিউজিল্যান্ডকে পিছনে ফেলে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। আর সচিনের মরুঝড়কেও ম্লান করে দেওয়া ইনিংস ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে জায়গা করে নেয়।