কুইন্সল্য়ান্ড: এমনটা হবে, কেই বা ভেবেছিল! কিছুদিন আগেই নিজের জাতীয় দলের বন্ধুকে হারিয়েছিলেন। সেই নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে আবেগপ্রবণও হয়ে গিয়েছিলেন। তখন কে জানত যে তাঁর নিজের সঙ্গেই এমন নিষ্ঠুর খেলা খেলবে জীবন। ৪৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম বিধ্বংসী ব্য়াটারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে একাধিক দুর্ধর্ষ ইনিংস উপহার দিয়েছেন। আজকের ওস্তাদের মার সিরিজে আমাদের প্রতিবেদন ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের অপরাজিত ১৪৩ রানের ইনিংসটি নিয়েই --


সাইমন্ডসের ব্য়াটিং তাণ্ডবেই ২০০৩ বিশ্বকাপে অজি শাসন শুরু


২০০৩ সালের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতারদের নিয়ে গড়া বোলিং ইউনিটের বিপক্ষে ১২৫ বলে ১৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। জোহানেসবার্গের পিচ বরাবরই বোলারদের স্বর্গরাজ্য। তার ওপর প্রতিপক্ষ দলে তাবড় তাবড় পেস তারকা। কিংবদন্তী আক্রম থেকে ওয়াকার তো ছিলেনই, ছিলেন বুলেট গতিতে ব্যাটারদের সামনে ত্রাস হয়ে ওঠা শোয়েব আখতারও। সেদিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাক অধিনায়ক ওয়াকার। সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল না, তার প্রমাণ মিলেছিল স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছিল যে ৮৬ রান বোর্ডে তুলতেই ৪ উইকেট খুঁইয়ে বসেছিল অজিরা। আক্রমের সুইয়ের সামনে মাথা নত করে ফিরে গেলেন হেডেন, মার্টিনরা। 


লড়াই শুরু সাইমন্ডসের


মিডল অর্ডারে পন্টিংকে নিয়ে স্কোরবাের্ড এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন অজি অলরাউন্ডার। ৬ নম্বরে ব্যাট করতে এসেছিলেন। যখন পন্টিং আউট হন ৫৩ রান করে তখন সাইমন্ডসের স্কোর ৫০ বলে ৩৪। তবে হাল ছেড়ে দেওয়ার বান্দা তিনি কোনওদিনই নন। তাই মারকুটে খেলার পন্থা বেছে নেন। আর সেখানেই তালগোল পাকিয়ে যায় পাক বোলিং শিবিরের। ব্র্যাড হগ ও ইয়ান হার্ভেকে নিয়ে দলের স্কোর তিনশোর গণ্ডি পার করে দিয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। 


কেরিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস


১২৫ বলে ১৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। ১৮টি বাউন্ডারি ও ২টো ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন সাইমন্ডস। ৩১০ রান সেদিন বোর্ডে তুলে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২২৮ রানে অল আউট হয়ে যায় পাকিস্তান। নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৯৮টি একদিনের ম্য়াচ খেলেছেন। হাঁকিয়েছেন ৬টি শতরান। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে কেরিয়ারের সেরা ইনিংস বোধহয় সেদিনই খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের ''ব্যাড বয়'' সাইমন্ডস।