কলকাতা: এক বছরে সাত অধিনায়ক!


ক্রিকেট বিশ্বে অধিনায়ক বদলের ঘটনা নতুন নয়। চোট, ঠাসা ক্রীড়াসূচির কারণে কোনও দলের নিয়মিত অধিনায়ক খেলতে না পারলে অন্য কাউকে কোনও একটি সিরিজের জন্য নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে। খারাপ ফর্মের জন্য অধিনায়ক ছাঁটাই করে কাউকে নতুন অধিনায়ক করার ঘটনাও বেনজির নয়।


কিন্তু এক ক্যালেন্ডার বর্ষে সাতজনকে অধিনায়ক করার ঘটনা নজিরবিহীনই। যে বেনজির ঘটনার সাক্ষী ভারতীয় ক্রিকেট (Team India)। চলতি বছরে সাতজন ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ খেলবে ভারত (Ind vs Zim)। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল যে, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন শিখর ধবন (Shikhar Dhawan)। যেহেতু কে এল রাহুলের (KL Rahul) ফিটনেস নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু রাহুল ফিট হয়ে যাওয়ায় তিনিই টিম ইন্ডিয়াকে নেতৃত্ব দেবেন। ধবন হবেন তাঁর ডেপুটি। বারবার অধিনায়ক বদলে টিমের পরিকল্পনা বা কৌশলে ধাক্কা লাগবে না?


আশ্বস্ত করছেন মনিন্দর সিংহ (Maninder Singh)। জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা আসন্ন ভারত-জিম্বাবোয়ে সিরিজের সম্প্রচারকারী চ্যানেল সোনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কে ধারাভাষ্য দেবেন। সিরিজ শুরুর আগে এবিপি লাইভের প্রশ্নে মনিন্দর বললেন, 'অধিনায়ক বারবার পাল্টে গেলে কী হবে, কোচ তো একই থাকছে। সমস্যা হবে না।'


প্রাক্তন বাঁহাতি স্পিনার যোগ করলেন, 'একসঙ্গে এত সিরিজ খেললে বিকল্প কাউকে তো অধিনায়ক করতে হবেই। কারও পক্ষে সব ম্যাচ খেলা সম্ভব নাও হতে পারে। বরং এতে বোঝা যায় কত প্রতিভা রয়েছে ভারতীয় দলে। অনেকেরই নেতৃত্ব দেওয়ার মতো দুর্দান্ত মানসিকতা রয়েছে। হার্দিক পাণ্ড্যকে দেখুন। আইপিএলে নেতৃত্ব দিয়ে দুর্দান্ত সফল হল। নির্বাচকদের কাছেও বিকল্প বাড়ছে। অনেক সময় আমরা ভাবতাম, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা বা কে এল রাহুলের পর কে জাতীয় দলের অধিনায়ক হবেন। এখন হাতে অনেক বিকল্প রয়েছে। আমার ধারণা শ্রেয়স আইয়ারকেও খুব তাড়াতাড়ি জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিতে দেখব।'


চলতি বছরের গোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জোহানেসবার্গ টেস্টে পিঠের চোটের জন্য খেলতে পারেননি বিরাট কোহলি। তাঁর পরিবর্তে দলকে নেতৃত্ব দেন কে এল রাহুল। ১-২ ব্যবধানে সেই টেস্ট সিরিজ হেরে যাওয়ার পর নেতৃত্ব ছাড়েন কোহলি। তাঁর পরিবর্তে তিন ফর্ম্যাটেই অধিনায়ক করা হয় রোহিতকে। কিন্তু রোহিতের চোট থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে নেতৃত্ব দেন রাহুল।


এরপর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দলকে নেতৃত্ব দেন রোহিত। কিন্তু আইপিএলের পর রোহিত ও রাহুল দুজনেরই চোট থাকায় ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অধিনায়ক হন ঋষভ পন্থ। তারপর আয়ার্ল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অধিনায়কত্ব করেন হার্দিক পাণ্ড্য। কার্যত একই সময়ে হওয়া এজবাস্টন টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন যশপ্রীত বুমরা। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের সিরিজে রোহিত ফের নেতৃত্বে ফেরেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ায় অধিনায়কত্ব করেন শিখর ধবন।


এক ক্যালেন্ডার বর্ষে সাতজনকে অধিনায়ক করার ঘটনা নজিরবিহীনই। যদিও তাতে পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়বে না বলেই মত জাতীয় দলের হয়ে ৩৫টি টেস্ট ও ৫৯টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলা স্পিনারের। মনিন্দরকে ভরসা দিচ্ছে ভারতীয় দলের কোচ হিসাবে কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়ের উপস্থিতি। অধিনায়ক বদলালেও ভারতীয় দলের খেলার ধার কমবে না, আশাবাদী মনিন্দর।


* ভারত বনাম জিম্বাবোয়ে সিরিজ দেখা যাবে সোনি সিক্স, সোনি টেন থ্রি ও সোনি টেন ফোরে, ১৮ অগাস্ট প্রথম ম্যাচ বেলা ১২.৪৫ থেকে।


আরও পড়ুন: পদকজয় বদলে দিয়েছে জীবন! সেনাবাহিনীতে পদোন্নতির পথে অচিন্ত্য