কলকাতা: ১৯৮১ সালের পর ২০২১, দীর্ঘ চার দশকের ব্যবধানে ফের কলকাতা ফুটবল লিগ (Kolkata Football League) চ্যাম্পিয়ন মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব (Mohammedan Sporting Club)। এত বছরে পৃথিবী অনেক বদলে গিয়েছে। কলকাতা ফুটবল লিগ পুরনো গরিমা হারিয়েছে। গড়ের মাঠের দুই প্রধান এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal), এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) এবারের লিগে দল নামায়নি। কলকাতার দুই প্রধান ক্লাব এখন আইএসএল (ISL) নিয়ে ব্যস্ত। তবে দুই প্রধান না থাকলেও, কলকাতা লিগের আকর্ষণ বাঁচিয়ে রেখেছে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সাদা-কালো জার্সির টানেই এখনও মাঠে ভিড় জমান দর্শকরা। এই কারণে মহমেডানের ফের কলকাতা লিগ জয় ঘরোয়া ফুটবলের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।


১৯৮১ সালে মহমেডানের লিগ জয়ী দলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই বয়স বেড়েছে। কেউ কেউ পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলেও গিয়েছেন। তবে যাঁরা আছেন, তাঁরা এই বয়সেও উত্তেজনা অনুভব করছেন। স্মৃতির সরণি বেয়ে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন চার দশক আগে। যখন কলকাতা লিগ ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা প্রতিযোগিতা ছিল। লিগ ঘিরে দর্শকদের উন্মাদনা ছিল অবিশ্বাস্য।


মহমেডানের ১৯৮১ সালের লিগ জয়ী দলের অন্যতম তারকা ছিলেন অলোক মুখোপাধ্যায়। এই প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ তখন সদ্য বড় দলের হয়ে খেলা শুরু করেছেন। মহমেডানের হয়ে দুর্দান্ত খেলেই সবার নজরে পড়েন এই লেফট ব্যাক। এরপর তিনি জাতীয় দলে সুযোগ পান। তাই আজ মহমেডানের কলকাতা লিগ জয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ছেন অলোক। পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে তাঁর।


এবিপি লাইভকে অলোক মুখোপাধ্যায় জানালেন, ‘আমার প্রথম বড় ক্লাব ছিল মহমেডান স্পোর্টিং। ওখান থেকেই ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই মহমেডানের ভাল কিছু হলে সবসময় আনন্দ হয়। কারণ, ওটা তো আমার ক্লাব। আজ ৪০ বছর পর মহমেডান স্পোর্টিং কলকাতা লিগ জেতায় খুব ভাল লাগছে। আমি প্রশান্ত (বন্দ্যোপাধ্যায়), কৃষ্ণেন্দু (রায়) আজ খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছিলাম। ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকলাম।’


১৯৮১ সালে তাঁদের লিগ জয় কতটা কঠিন ছিল? এই প্রাক্তন ফুটবলার জানালেন, ‘সেবার আমাদের জয় অনেক বেশি জমজমাট ছিল। কারণ, তখন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানও যথেষ্ট শক্তিশালী দল ছিল। তাদের টপকে আমরা লিগ জিতেছিলাম। ১৯৮১ সালে আমাদের দলও খুব ভাল ছিল। সিনিয়রদের পাশাপাশি ৫-৬ জন জুনিয়র ছেলে ছিল। দল দারুণ খেলে লিগ জিতেছিল। আমি তখন জুনিয়র। প্রথমে এশিয়ান গেমসের দলে আমাকে রাখা হয়নি। তবে কলকাতা লিগের পারফরম্যান্স দেখে আমাকে জাতীয় শিবিরে ডাকা হয়। এশিয়াডের পর ১৯৮২ সালের নেহরু কাপেও খেলার সুযোগ পাই। সেই সময়টা আমার জীবনের সেরা অধ্যায় ছিল। আজ তাই মহমেডানের লিগ জয় আমার কাছে অন্যরকম মুহূর্ত। পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।’