কলকাতা: রবিবার কোলাঘাটে যেখানে ভোটগণনা হবে, তার ঠিক পাশেই তাঁর অস্থায়ী ঠিকানা। দলীয় কর্মীদের নিয়ে সেখানেই একটি হোটেলে রয়েছেন। আর প্রস্তুতি নিচ্ছেন রবিবাসরীয় ভাগ্যপরীক্ষার।


তিনি অশোক দিন্দা। সদ্য রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। আর রাজনীতির বাইশ গজে নামামাত্র তাঁর হাতে নতুন বল। প্রতিপক্ষ ব্যাটিংকে তছনছ করে দিতে অধিনায়কেরা বাংলার পেসারের ওপর ভরসা করতেন। রাজনীতির ময়দানেও সেই একই ভূমিকায় দিন্দা। জাতীয় দলের প্রাক্তন পেসারকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। প্রচার করেছেন, প্রচারে বেরিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। রাজনীতির আঙ্গিকে সবরকম অভিজ্ঞতাই সঞ্চয় করে ফেলেছেন দ্রুত। ভোটগণনার আগে বেশ ফুরফুরে মেজাজে প্রাক্তন পেসার।


রবিবার ভোটের ফলাফল। তার আগের দিন কীভাবে সময় কাটালেন? শনিবার বিকেলে এবিপি লাইভকে দিন্দা বললেন, 'সকাল থেকে উপোস করেছিলাম। তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়েছি। পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছি। ভীষণ ইতিবাচক রয়েছি।'


ক্রিকেট মাঠে অনেক কঠিন ম্যাচ খেলেছেন। খেলোয়াড়েরা বলেন, বড় ম্যাচের আগের দিন অনেকেরই একটা অস্থিরতা কাজ করে। সেরকম কিছু অনুভূতি... দিন্দা বলছেন, 'আমি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। ক্রিকেট মাঠের একটা কথা আছে। আগে লিড নিতে হবে, তারপর পরবর্তী কৌশল। আমাদেরও আগে ম্যাজিক ফিগার ১৪৮ নিশ্চিত করতে হবে। তারপর ব্যবধান বাড়াতে হবে। অমিত শাহ বলেছিলেন দুশো আসন হবে। প্রাথমিক লক্ষ্য ১৪৮। সেভাবেই মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছি।'


প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সংগ্রাম কুমার। তাঁর বিরুদ্ধে জয়ের ব্য়াপারে এতটা আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন কীভাবে? দিন্দা বলছেন, 'প্রত্যেক মানুষের দরজায় গিয়েছি। গাড়িতে, বাইকে, সাইকেলে, পায়ে হেঁটে প্রচার করেছি। ভোটগ্রহণের দিন প্রত্যেক বুথে গিয়েছি। মানুষের আশ্বাস পেয়েছি। জয়ের ব্যাপারে তাই নিশ্চিত।'


করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন ভোটগণনার দিন বেশ কিছু নিয়মাবলী দিয়েছে। ফলপ্রকাশের পর বিজয় মিছিলে যেমন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেরকমই প্রার্থীদেরও করোনা পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। সেই মতো করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন দিন্দাও। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই। শনিবার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সারাদিন কাটালেন। রবিবার সকালেই স্ট্রংরুমের সামনে পৌঁছে যাবেন।


দেশ তথা বাংলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত দিন্দা। 'বাংলায় ক্ষমতায় এলে বিজেপি সরকার করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে জোরদার করবে। মানুষের কাছে আবেদন, করোনাকে তাড়ান। তবে করোনা আক্রান্তদের পাশে থাকুন,' বলছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার।


ভোটের আবহেও নিজের ক্রিকেটার সত্তাকে ভুলছেন না। আইপিএলের দিকেও রয়েছে নজর। দিন্দা বলছেন, 'করোনার কারণে অনেক ক্রিকেটার সরে দাঁড়িয়েছে। পরিবার প্রত্যেকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্রিকেটারদের সবরকম পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে হয়। আইপিএল সন্ধের পর মানুষকে বাড়িতে আটকে রাখছে। সারাক্ষণ উদ্বেগ নিয়ে থাকলে লোকে অসুস্থ হয়ে পড়বে। জীবনে বিনোদনও দরকার। তাই আইপিএলও চলুক।'