কলকাতা: ষোলো বছর আগের ঘটনা। ২০০৬। ডিসেম্বরের পারথ। রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের ইংল্যান্ড। পন্টিংয়ের দলের অন্যতম সেরা বোলিং অস্ত্র শেন ওয়ার্ন (Shane Warne)। তখনই তিনি কিংবদন্তি হয়ে গিয়েছেন। প্রতিপক্ষের তরুণ স্পিনারকে ডেকে নিলেন। তারপর চলল স্পিন বোলিং শিল্প নিয়ে আড্ডা। তরুণকে হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন, কোন বলের সময় গ্রিপ কীরকম হওয়া উচিত। ওয়ার্নের সেই উদার সত্ত্বা এখনও ভোলেননি সেদিনের সেই ইংরেজ তরুণ। প্রাক্তন স্পিনার মন্টি পানেসর (Monty Panesar)।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়ার্নের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরই ক্রিকেট বিশ্বে শোকের আবহ। শোকস্তব্ধ পানেসরও। এবিপি লাইভকে মোবাইল ফোনে বললেন, 'ভীষণ খারাপ খবর। শেন ওয়ার্নের মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।'
কিংবদন্তির স্মৃতি বলতেই পানেসরের মনে পড়ছে তাঁর প্রথম অ্যাশেজের কথা। পারথে যখন ওয়ার্নের পরামর্শ পেয়েছিলেন। পানেসর বলছেন, 'আমার মনে আছে অ্যাশেজে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম পারথে, ২০০৬ সালে। সেই ম্যাচে খেলেছিল ওয়ার্নও। সেই সময়ই দেখেছিলাম ওর মহানুভবতা। বিশ্বের সমস্ত স্পিনারদের, সে প্রতিপক্ষ দলের হলেও, পছন্দ করত। পরামর্শ দিত। বলত, আমরা সবাই এক জার্সির খেলোয়াড়। সবাই স্পিনের শিল্পী। ওর পরামর্শ পেয়ে খুপ উপকৃত হয়েছি।'
পানেসরের মনে পড়ছে এক মজার ঘটনাও। সেটাও পারথে সেই ম্যাচের। পানেসর বলছেন, 'আমি ওর গুগলি ধরে ফেলেছিলাম। কিন্তু পরের বলেই ও গুগলির অ্যাকশনে লেগস্পিন করেছিল। আমি সম্পূর্ণ বোকা বনে গিয়েছিলাম। এটা ওর পক্ষেই সম্ভব ছিল।'
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪৫ টেস্টে ৭০৮ উইকেট নিয়েছেন ওয়ার্ন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। শ্রীলঙ্কার মুথাইয়া মুরলীধরনের পরেই। ১৯৪টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলে ২৯৩ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়ার্ন। ওয়ান ডে-তে তাঁর সেরা বোলিং ৩৩ রানে ৫ উইকেট। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০১টি উইকেট নিয়েছেন লেগস্পিনার।
পরবর্তীকালে একসঙ্গে ধারাভাষ্যকার হিসাবেও কাজ করেছেন পানেসর-ওয়ার্ন। 'ভীষণ মজার মানুষ ছিল। প্রকৃত কিংবদন্তি। মাঠে ও মাঠের বাইরে অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্ব। ক্রিকেট ওয়ার্নকে মিস করবে,' বললেন পানেসর।