কলকাতা: রবিবার খাতায় কলমে ভারতের ম্যাচ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। যদিও এই ম্যাচে শাহিন আফ্রিদি-হাসান আলি-হ্যারিস রউফদের পাশাপাশি ভারতকে লড়াই করতে হবে এক অদৃশ্য প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও। যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হতে শুরু করেছে কোনও কোনও মহলে।


কে সেই ভীষণ প্রতিপক্ষ?


শিশির। সূর্যাস্তের পরই যা নিঃশব্দে ঝরে পড়ে। আর ম্যাচে গড়ে দেয় ফারাক। কীভাবে? শিশির পড়া মানেই বল বারবার ভিজে যাবে। বোলাররা বল গ্রিপ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন। সুবিধা পেয়ে যাবেন ব্যাটাররা। পাশাপাশি পিচের চরিত্রেও রদবদল ঘটবে। শিশিরে পিচ ভিজে গেলে বল পড়ে দ্রুত ব্যাটে আসবে। তাতে সুবিধা হবে ব্যাটিং টিমের।


সদ্যসমাপ্ত আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। মরুদেশে ৭ ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতে চলে গিয়েছিল প্লে অফে। ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হারলেও সকলের সমীহ আদায় করে নিয়েছিল শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দল। সেই কেকেআরের জয়ের ফর্মুলা ছিল সহজ-সরল। প্রথমে ফিল্ডিং করে প্রতিপক্ষকে কম রানে আটকে রাখো। আর দ্বিতীয়ার্ধে যখন শিশিরে বল কিছুটা ভিজে যাবে আর বিপাকে পড়বেন প্রতিপক্ষ বোলাররা, তখন জয়ের রান তুলে দাও।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কতটা প্রভাব ফেলবে শিশির? টস জেতা মানেই কি ম্যাচ জয়ের সামিল? প্রথমে ফিল্ডিং করে প্রতিপক্ষ বোলারদের শিশিরের মুখে ফেলে শুরুতেই সুবিধা পেয়ে যাওয়া?


শিশির নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতীয় শিবিরও। ভারত-পাক মহারণের আগের দিন জুম কলে বিরাট কোহলি বললেন, 'যত সময় যাচ্ছে, শিশির সমস্যা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে।' কোহলি অবশ্য তাতে ইতিবাচক ছবিই দেখছেন। বলছেন, 'আশা করছি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পিচের ছবিটা বদলাবে। আইপিএল ফাইনাল দেখার পর মনে হয়েছে বাইশ গজের চরিত্রে এবার কিছু পরিবর্তন দেখতে পাব। পাশাপাশি এটা আইসিসি-র টুর্নামেন্ট। সব মাঠেই পিচের গুণগত মান বজায় রাখা হবে বলেই আমাদের ধারণা। আইপিএল ফাইনালের পিচ দারুণ ছিল। শিশির পড়লে পিচ আরও ভাল হবে বলেই মনে হচ্ছে। দুবাই ও আবু ধাবির পিচ বেশি ভাল হবে। শারজার পিচ একটু মন্থর হবে।'


আরও পড়ুন: ব্যাট হাতেও ম্যাচ জেতাতে পারেন হার্দিক, কোহলির সুরেই বলছেন কোচ-সতীর্থরা


সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে সদ্য আইপিএল খেলে ফিরেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের উইকেটকিপার ছিলেন বঙ্গ তারকা। মরুদেশে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে অবশ্য আশ্বস্ত করছেন ঋদ্ধিমান। বলছেন, 'এবার সেরকম শিশির পাইনি। তবে গতবার আইপিএল খেলার সময় শিশির পড়ছিল। আইপিএলের পরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হচ্ছে। এই কদিনের মধ্যে আবহাওয়ার ব্যাপক কোনও পরিবর্তন না হলে সেভাবে শিশির ফ্যাক্টর হবে না।'


ঋদ্ধি যোগ করছেন, 'আইপিএলের সময় দুবাইয়ে শিশির ছিল না। তাই মনে হয় শিশিরের জন্য খেলায় প্রভাব পড়বে না। আগেরবার আইপিএলের সময় বরং অনেক বেশি শিশির দেখেছি। পরে বল করতে চাইত না কোনও দলই। এবার ততটা শিশির দেখিনি।'


আইপিএল খেলে ফিরেই বাংলার হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি খেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন ঋদ্ধি। তবে ভারত-পাক মহারণের আঁচ ভালরকমই টের পাচ্ছেন। কারা এগিয়ে? ঋদ্ধি বলছেন, 'নিজের দেশকেই এগিয়ে রাখব। ভারতীয় ক্রিকেটারেরা তো বটেই, অনেক দেশের প্রচুর ক্রিকেটার আইপিএল খেলেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের সকলেরই সুবিধা হবে। আবহাওয়া, পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে তারা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে। তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো রসদ রয়েছে ভারতীয় দলের।'