কলকাতা: আশঙ্কাটা বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারতীয় ক্রিকেটমহলের আনাচ-কানাচে ঘোরাফেরা করছে। বোলার হার্দিক পাণ্ড্যকে (Hardik Pandyua) কি মরুদেশে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেখা যাবে?


পিঠের অস্ত্রোপচারের পর থেকে খুব বেশি বোলিং করতে দেখা যায়নি বঢোদরার পেসার-অলরাউন্ডারকে। সদ্যসমাপ্ত আইপিএলেও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বল করায়নি হার্দিককে। প্রশ্ন উঠছিল, হার্দিক কি আদৌ ফিট?


শনিবার যে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন স্বয়ং ভারত অধিনায়ক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মহারণের আগে বিরাট কোহলি জানিয়েছেন, হার্দিক বল করার মতো ফিট নন এখনই। তবে টুর্নামেন্টের পরের দিকে ম্যাচে ২ ওভার বল করার মতো জায়গায় পৌঁছনোর জন্য চেষ্টা করছেন। কোহলি বলেন, 'সত্যি কথা বলতে কী, ওর যা শারীরিক অবস্থা, তাতে টুর্নামেন্টের কোনও একটা সময়ে আমাদের হয়ে ম্যাচে ২ ওভার মতো বল করার জায়গায় পৌঁছনোর জন্য চেষ্টা করছে হার্দিক। ও বোলিং শুরু করার আগে পর্যন্ত আমাদের হাতে যা সুযোগ আছে তা কাজে লাগাতে পারি বলেই আমাদের বিশ্বাস। ২-১ ওভার বল করতে পারে এরকম বিকল্প নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। তাই হার্দিক বল করতে পারল কি না, তা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা নেই।'


পাশাপাশি কোহলি জানান যে, ব্যাট হাতেও ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে হার্দিক এবং শুধু ব্যাটার হিসাবেও তাঁকে খেলানো যায়। কোহলি বলেন, 'ব্য়াটিং অর্ডারের ৬ নম্বরে ও যা পারে সেটা রাতারাতি তৈরি করা যায় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওকে ব্যাটার হিসাবে খেলানোর ব্যাপারেও সায় দিয়েছি এবং অস্ট্রেলিয়ায় ও দেখিয়েছিল কী করতে পারে। ছন্দে থাকলে প্রতিপক্ষের হাত থেকে ম্যাচ নিয়ে বার করে নিয়ে যেতে পারে। এটা নিয়ে উত্তেজক আলোচনা হতে পারে যে, বল করতে না পারলে ও বাদ পড়বে কি না। তবে ছ'নম্বরে ব্যাটার হিসাবে ও দলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমরা জানি। বিশ্বক্রিকেটের সব দলই ওই জায়গায় ব্যাটিংয়ের জন্য বিশেষজ্ঞদের রেখেছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওই জায়গায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ব্যাটার খেলানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতে উইকেট পড়ে গেলে ও লম্বা ইনিংসও খেলতে পারে। ওকে জোর করে কিছু করাতে চাই না। তবে ও বল করলে দলের ভারসাম্য বাড়বে ঠিক কথা।'


অধিনায়কের মতের প্রতিফলন পাওয়া গেল হার্দিকের ছোটবেলার কোচের কথাতেও। তিনি, কিরণ মোরে, খুব ছোটবেলা থেকে দুই পাণ্ড্য ভাই, হার্দিক ও ক্রুণালকে তালিম দিয়েছেন। জাতীয় দলের প্রাক্তন উইকেটকিপার বলছেন, 'হার্দিক বিগহিটার। সবচেয়ে বড় কথা, যে কোনও বলকে বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিতে পারে। আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে বছরের পর বছর খেলে ও এখন অনেক পরিণত। চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারে। লোয়ার মিডল অর্ডারে ২০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলতে পারে। ব্যাটার হার্দিকও যে কোনও দলের সম্পদ।'






ভারত অধিনায়কের সুর শোনা গেল ঋদ্ধিমান সাহার গলাতেও। সদ্য আইপিএল খেলে ফিরেছেন। এবিপি লাইভকে বঙ্গ তারকা বললেন, 'ও যে ধরনের ক্রিকেটার তাতে ব্যাট হাতেও ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। হার্দিক বোলিং করলে দলের অ্যাডভ্যান্টেজ তো বটেই, তবে ব্যাটার হার্দিককেও হিসাবের বাইরে রাখতে পারবে না প্রতিপক্ষ।'


আরও পড়ুন: হ্যান্ডশেক করার সময়ও স্লেজিং ভারত-পাক ক্রিকেটারদের! ফাঁস করলেন প্রাক্তন পেসার


রেকর্ড বুক বলছে, হার্দিকের ব্যাটিং পরিসংখ্যান বেশ ঈর্ষণীয়। ৪৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৪৮৪ রান করেছেন বঢোদরার অলরাউন্ডার। স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৩৪। যার অর্থ, প্রত্যেক একশো বলে প্রায় দেড়শো রান করে দিতে পারেন হার্দিক।


ব্যাটে-বলে সাফল্যের জন্য এক সময় তাঁকে কিংবদন্তি কপিল দেবের যোগ্য উত্তরসূরি মনে করা হতো। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুধু ব্যাট হাতেই ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারেন কি না, দেখতে উৎসুক ভারতীয় ক্রিকেট মহল।